অনলাইন ডেস্ক
বরিশালে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে ফাঁসাতে অপ-তৎপরতার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী মডেল থানায় এ ঘটনা ঘটেছে। ভুক্তভোগী হলেন, থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম। তিনি সংশ্লিষ্ট সদস্য যোগদানপ্রাপ্ত। যদিও ফাঁসানোর ঘটনায় থানার ডিউটি অফিসারের রুমের ভিডিও ফুটেছে সত্যতা উঠে এসেছে।
ভুক্তভোগী অভিযোগে জানান, গত ৯ এপ্রিল এক মাসের জন্য নগরীর আবাসিক হোটেল জাকিয়ায় একটি রুম ভাড়া নেন এক নারী। গত ১৭ এপ্রিল সঙ্গত কারনে ঐ রুম ছেড়ে দেয়ার জন্য নারীকে জানান হোটেল ম্যানেজার জাকির হোসেন। পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নারী ঐদিন সকালে রুম থেকে তার ৭০ হাজার নগদ টাকা ও স্বর্ণ পাচ্ছেন না বলে সকাল ১০টার দিকে ম্যানেজারকে অবহিত করেন। এসময় তিনি গোয়েন্দা সংস্থাকে (ডিবি) জানালে তারা এসে জাকিরকে একাধিকবার জিজ্ঞাসা করেন। কিন্ত জাকির নির্দোস জানিয়ে বারবার কর্মকর্তাদের অবহিত করেন।
তিনি আরও জানান, এরপর বিকেল ৪ টার দিকে হোটেল এলাকায় আমার মোবাইল টিমের ডিউটি চলাকালে আমি বিষয়টি জানতে পারি। এরপর ঘটনাস্থলে গিয়ে নারীকে থানায় অভিযোগ দায়ের করতে বলি। সে অনুযায়ী ঐ নারী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগেরও তদন্তভার আমার ওপর আরোপিত হয়।
এদিকে জাকিরের পক্ষে বিষয়টি সমাধানের জন্য উভয়পক্ষকে নিয়ে স্থানীয়রা থানায় বসেন। তারা জাকিরকে নির্দোস দাবি করলেও যেহেতু হোটেল রুম থেকে টাকা হারানোর অভিযোগ করেছেন ঐ নারী এজন্য তাকে সহায়তা বাবদ ৫ হাজার টাকা প্রথমে দেয়ার জন্য সকলের মধ্যে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানতে পারি। আমি থানায় থাকলেও সমঝোতার মধ্যে ছিলাম না বলেও জানান এসআই সাইফুল। পরবর্তীতে ঐ নারী তা না আমায় তাকেও ১০ হাজার টাকা সহায়তার প্রস্তাব দেন সমঝোতাকারীরা। প্রথম ভুক্তভোগী নারী তাতে রাজি হলেও থানা থেকে বেরিয়ে আবার প্রবেশ করে ২০ হাজার টাকা দাবি করেন। সেটি জাকির কিংবা সমঝোতাকারীদের পক্ষে দেয়া সম্ভব না বলে জানিয়ে দেয়া হয়। কারণ জাকির নিজেকে নির্দোস দাবি করেন।
সাইফুল আরও জানান, সমঝোতা না হওয়ায় ভুক্তভোগী নারী আমাকে বিষয়টি জানান। ঐ নারী জানান, থানায় আপোষ হবে না, আমি আদালতে দ্বারস্থ হবো। বিষয়টি আমি উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও নারীর ভাষ্যমতে তারই সামনে ডিউটি অফিসারের রুমে বসে থানার অভিযোগ প্রত্যাহারের আবেদন লিখে দেই। সেখানে তিনি থানার অভিযোগ উঠিয়ে নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবেন বলে জানান। ঐ নারী যেমন ভাবে উপস্থাপন করেছেন আবেদনেও সেটিই উল্লেখ করে দেই। এরপর তিনি স্বেচ্ছায় সেই আবেদনে স্বাক্ষর করেন। যা থানা ও আমার কাছে সিসি ফুটেজে সংরক্ষিত রয়েছে।
এদিকে জানা গেছে, পুরো বিষয়টি সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে ওইদিনই ঘটনার বিষয়ে জিডি নং-১০৪৫ এ নোট প্রদান করি। সেখানেও উল্লেখ আছেন , ভুক্তভোগী নারী থানার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন না , আদালতে যাবেন, যা একটি অনলাইন জিডি।
এসআই সাইফুল জানান, আমার ওপর দায়িত্ব আমি যথাযথভাবে পালন করেছি। আমি বিষয়টি সুস্পষ্টভাবে তদন্ত করছিলাম। বিষয়টি সুরাহায় থানায় আসেন জাকিরের পক্ষে স্থানীয়রা। যদিও সেই সমঝোতায় আমি ছিলাম না। অথচ আমাকে জড়িয়ে অহেতুকভাবে মিথ্যা অপ-প্রচার চালানো হচ্ছে। এছাড়া ভুক্তভোগী নারী নিজেই তার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অভিযোগ তুলে নিয়েছেন । আমি কোন সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেইনি। তার দেয়া ভাষ্যমতে , আমি ডিউটি অফিসারের রুমে বসে কাগজে লিখেছি। তিনি যেভাবে বলেছেন সেভাবেই উল্লেখ করেছি। আর ঐ নারী নিজেই স্বেচ্ছায় সেই কাগজে স্বাক্ষর দিয়েছেন । যা সিসি ফুটেজ আমি সংরক্ষন করেছি। আমাকে ফাঁসাতে বিভিন্ন মাধ্যমে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন ঐ নারী। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে উর্ধতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে সিটি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, থানার ডিউটি অফিসারের রুমে বসে এসআই সাইফুল এক নারীকে পার্শে রেখে কাগজে লিখছিলেন। ঐ নারী তাকে যা বলছে সেটিই লিপিবদ্ধ করা হচ্ছে। এরপর কাগজের লেখার শেষে ঐ নারীই স্বেচ্ছায় সেখানে স্বাক্ষর করেছেন। থানার সিসিটিভি ফুটেজে পুরো বিষয়টি উঠে এসেছে।
Leave a Reply