বিশেষ প্রতিনিধি।।
মেহেন্দিগঞ্জে জমির নামে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া জমি বিক্রির নামে টাকা হাতিয়ে নিলেও দলিল করে দিতে টালবাহানা করছে মালিক পক্ষ। প্রতিবাদ করায় উল্টো একাধিক হামলা -মামলার শিকার হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার উত্তর উলানিয়া ইউনিয়নের পুর্বহর্ণী গ্রামের কবিরাজ মাহাবুবুল আলম মাঝির কাছ থেকে একই গ্রামের মিজানুর রহমান আকন ও তার স্ত্রী লাইজু বেগম ৫৯৩২৪৯২ নং একটি স্ট্যাম্পের মাধ্যমে পুর্বহর্ণী মৌজার জে. এল নং ৬০, এস এ খতিয়ান ১০৯, এস এ দাগ ৪৮১/৪৮২/৪৮৩ ও ৪৮৬ এবং বিএস খতিয়ান ৩৭০, দাগ ৯৩৯/৯৪০/৯৪১/৯৪২তে মোট ৬ শতাংশ জমি বায়নাচুক্তি করেন। কিন্তু বায়নাচুক্তির মেয়াদ দীর্ঘদিন হলেও জমি রেজিস্ট্রি করে দিতে টালবাহানা শুরু করেন কবিরাজ মাহাবুব আলম। বায়না সুত্রে জমির মালিকানা দাবীদার মোঃ মিজানুর রহমান আকন ওই জমিতে ঘর তুলে বসবাস করার প্রায় ২বছর পরে তাদের সেই ঘরটি ভেঙে দেয় জনৈক রাশিদা বেগম নামের এক নারী। তিনি ওই জমি নিজের দাবী করে ঘরটি ভেঙ্গে দেয়। এছাড়াও জমি থেকে দখল মুক্ত করতে মিজানুর রহমান আকনকে আসামি করে আদালতে একটি সাজানো ধর্ষন মামলা দিয়ে হয়রানি করারও অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী। সেই মামলা মোকাবিলা করতে গিয়ে তাদের অনেক টাকা খরচ করতে হয়েছে। পরবর্তীতে তদন্তে প্রমানিত হয় মামলাটি ছিলো মিথ্যা। লাইজু বেগম বলেন, আমার স্বামী মিজানুর রহমানকে পরিকল্পিতভাবে একাধিকবার মারধর করেন রাশিদা বেগম এর ছেলে রানার নেতৃত্বে তার পরিবার। মিজানুর রহমান এর অভিযোগ জমি দলিল এর নামে সকল ঘটনাগুলো পরিকল্পিতভাবে ঘটিয়েছে তাদের বায়নাচুক্তির জমির দাতা কবিরাজ মাহাবুব আলম। তিনি ভূয়া মালিক সেজে গত ১৯/০৬/২০১৩ সালে আমাদের কাছে ৬শতাংশ জমি বিক্রির কথা বলে বায়না বাবদ ৯০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। দীর্ঘদিন পর্যন্ত সেই জমি দলিল দিম দিচ্ছি বলে কালক্ষেপণ করে আসছেন এবং আমরা জমির দলিল করার তাগাদা দেওয়ায় অন্যদের লেলিয়ে দিয়ে হামলা-মামলা করেছেন। এমনকি মামলা থেকে মুক্ত করার কথা বলে প্রায় ৬লাখ টাকা হাতিয়ে নেন মাহাবুব আলম । স্থানীয়রা জানান, বিরোধপুর্ণ জমির প্রকৃত মালিক ওই এলাকার সেকান্দর আলী নাজির এর ছেলে সেলিম নাজির। অভিনব কৌশলে সেলিম নাজির এর কাছ থেকে অভিযুক্ত কবিরাজ মাহাবুব আলম একটি বায়নাচুক্তি গ্রহণ করে মালিক সাজেন। ওই জমির প্রকৃত মালিক সেলিম নাজির জমিটি বর্তমানে অন্যাথায় বিক্রি করে দিয়েছেন। অভিযুক্ত মাহাবুব আলম সেই জমির দলিল এবং দখল দিচ্ছেন না। এমনকি আমাদের টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।
এছাড়াও একই গ্রামের প্রয়াত বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলম এর ছেলে মিজান হাওলাদার বলেন, কবিরাজ মাহাবুব আলম স্থানীয় সাবেক সাংসদ পংকজ নাথ এর ছত্রছায়ায় তৎকালীন ধরাকে সরা জ্ঞান করে বেড়িয়েছেন। তার অত্যাচার নির্যাতনে আমরাও ভুক্তভোগী। কবিরাজ মাহাবুব আলম পেশিশক্তির বলে আমাদেন রেকডিও জমি তছরুপ করে আসছেন, তার ছাড়া তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৎকালে আমার পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা জাহাঙ্গীর আলমকে মারধর করে গুরুত্বর আহত করেছিলো, আমার পিতা দীর্ঘদিন চিকিৎসাধিন থেকে মারা যায়। আমরা সেসময় একটি মামলা দায়ের করি। কিন্তু তৎকালীন সাংসদ পংকজ নাথ এর হস্তক্ষেপ আর উপযুক্ত স্বাক্ষী প্রমানের কারনে মামলাটি খারিজ হয়ে যায়। হামলার ঘটনাটি ঘটে গত ২০১৩ সালে আর মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে ১৫-০৬-২০২০। মাহাবুব আলম এর প্রতারণা আর সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি করেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। এ বিষয়ে মাহাবুব আলম এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে তাকে না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।
Leave a Reply