বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানের পুলিশ প্লাজা কনকর্ডের নৌ পুলিশ কনফারেন্স রুম আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান নৌ-পুলিশের প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. শফিকুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ঢাকার বাইরে থেকে লাখ লাখ কোরবানির পশু নৌপথে ঢাকায় আসবে। এসব পশু যেন কোনো ধরনের বাধা ছাড়া ব্যবসায়ীরা ঢাকায় নিয়ে আসতে পারেন সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাব।
এছাড়া পশু যেন হাটে বিক্রি করে নিরাপদে ব্যবসায়ী নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারেন সে লক্ষ্যেও আমরা কাজ করব।
গত বারের ঈদটি কোনো ধরনের বড় দুর্ঘটনা ছাড়ে কেটেছে উল্লেখ নৌ-পুলিশের প্রধান বলেন, এবারও সমন্বিতভাবে কাজ করব যাতে কোনো ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা না ঘটে। যেহেতু এই ঈদটি অনুষ্ঠিত হবে আষাঢ় মাসে, এই মাসে ঝড়-বৃষ্টি বেশি হয়ে থাকে।
তিনি বলেন, এবার অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে আমাদের সবাইকে। আবহাওয়া যখন খারাপ থাকবে তখন নৌযান চালানো যাবে না। যাত্রীবাহী হোক কিংবা পশুবাহী হোক আবহাওয়ার অবস্থা জেনেই যেন আমরা নৌ-পথে নৌযান নিয়ে রওনা হই। সারা দেশে আমাদের ১৪২ টি ইউনিট আছে আবহাওয়ার অবস্থা জানা থেকে শুরু করে ঈদ যাত্রার নৌযান ও পশুবাহী নৌনযানকে আমরা সাহায্য করতে পারব।
নারায়ণগঞ্জ ও বরিশালের চৌঘাট দিয়ে ঈদ যাত্রায় লাখ লাখ যাত্রী যাতায়াত করবেন নৌ-পথে। লঞ্চমালিক ও শ্রমিকদের বলব সবাই যেন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে নৌ-পথে ঈদ যাত্রা শুরু না করেন। এছাড়া ফিটনেসবিহীন লঞ্চ নিয়ে যেন ঈদ যাত্রা কোনো মালিক না করেন এবং প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে কোরবানির পশু পরিবহনের ক্ষেত্রেও নিরাপদ নৌযান ব্যবহার করতে হবে না। কোনোভাবেই যেন অনিরাপদ নৌযান দিয়ে কোরবানির পশু পরিবহন না করা হয়।
নৌ পুলিশ প্রধান বলেন, নৌ দুর্ঘটনার অধিকাংশ ঘটে বালুবাহী বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষের কারণে। ঈদের কয়েক দিন আগে ও পরে বাল্কহেড চলাচল সম্পূর্ণ রুপে বন্ধ রাখতে হবে, এটি সরকারি নির্দেশ। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী এ সময়ে কোনোভাবেই বাল্কহেড চালানো যাবে না।
অতিরিক্ত আইজিপি বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে দেশের বিভিন্ন বড় হাটে নৌ-পথে পশু পরিবহন করে নিয়ে আসা হবে। নৌপথে যেন এসব পশুবাহী নৌযান ডাকাতির শিকার না হয় সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করব। নৌপথে ডাকাতি বন্ধে ও আইনি প্রক্রিয়া গ্রহনের সক্ষমতা আমাদের রয়েছে। আমাদের ২০০ হর্সপাওয়ারের স্প্রিটবোট রয়েছে, তাই নৌপথে ডাকাতদের ধরতে আমরা সক্ষম। আর কোরবানি পশুর বিক্রির টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে নিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করছি ব্যবসায়ীদের। হকাররা বিভিন্ন খাবারের সঙ্গে নেশা জাতীয় ওষুধ মিশিয়ে যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের অজ্ঞান করে সর্বস্ব নিয়ে যাচ্ছে।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেন, নদীর পাড়ে আশেপাশে যে গরুর হাট গুলো বসবে যেগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেটা ছোট হোক বড় হোক। যেখানে মনে হবে নিরাপত্তা বাড়ানো প্রয়োজন সেখানে আমাদের বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। অব্যবস্থাপনা চাঁদাবাজি ঠেকাতে আমাদের বিভিন্ন টিম কাজ করবে, সিভিলে থাকবে, পেট্রোল টিম থাকবে এবং জেলা পুলিশের সঙ্গে মিলে কাজ করবে। আমাদের কতজন পুলিশ কাজ করবে সেটা বিষয় নয়। প্রয়োজন অনুযায়ী বাড়বে কমবে, সেখানে নিরাপত্তার জোরদার করার প্রয়োজন আমাদের সর্বোচ্চ নজর থাকবে।
Leave a Reply