মৎস্য অধিদপ্তরের উপপ্রধান (সামুদ্রিক শাখা) মুহাম্মদ তানভীর হোসেন চৌধুরী বলেন, ২০ মে থেকে সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকবে। সাগরে মাছ সংরক্ষণ ও প্রজননের জন্য এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। সাগরে মাছ ধরার জন্য যে অনুমতি দেয়া হয়, আজ মধ্যরাত থেকে তা বন্ধ হয়ে যাবে। ২০১৪ সাল থেকে এ কার্যক্রম চলমান।
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সামুদ্রিক মৎস্য সংরক্ষণ সফল করতে প্রস্তুতি হিসেবে উপজেলার মৎস্যজীবী, মৎস্য ব্যবসায়ী, ট্রলার ও নৌকা মালিক, জেলে, আড়তদার এবং বরফকল মালিকদের নিয়ে মৎস্য বন্দর আলীপুর, মহিপুর, কুয়াকাটা, গঙ্গামতি, চাড়িপাড়া, ঢোস, দেবপুর, পাটুয়াসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে জনসচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। সরকার ঘোষিত ৬৫ দিনের সরকারের অভিযান সফল করতে সভায় অংশগ্রহণকারীরা মাছ আহরণ, বিপনন থেকে বিরত থাকতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছেন। জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নিষেধাজ্ঞা আর বৈরি আবহাওয়ায় নাকাল তারা। একটানা মাছ ধরা বন্ধ থাকায় কর্মহীন পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্বিষহ দিন কাটাতে হবে তাদের। জেলেরা দাবি করে বলেন, ‘আমরা অবরোধের সময় যে পরিমাণে চাল পাই তা সামান্য। অবরোধকালীন আমরা অন্য কোনো কাজ করতে পারি না।’ এ সময় হয় তাদের জন্য ভিন্ন পেশার ব্যবস্থা নয়তো বাড়তি চালের ব্যবস্থার দাবি জানান তারা।
মহিপুরের নজীবপুরের সোহেল নাজীর বলেন, ‘অবরোধের সময় আমরা শুয়ে বসে সময় পার করি। আর ফাঁকা মাঠে গোল দেয় ইন্ডিয়ার জেলেরা।’
গঙ্গামতির জেলে মো. ছলেমান বলেন, ‘মাত্র ৬৫ কেজি চালের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। অথচ আমাদের কত খরচ সংসারে। অবরোধ দিলে পুরো সাগরই ফ্রি থাকবে। কিন্তু সাগরে ভারতের জেলেরা মাছ ধরে আরামে। এগুলো সরকার কেন দেহে না?’
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলার সিনিয়র মৎস কর্মকর্তা অপু সাহ জানান, কলাপাড়া উপজেলায় নিবন্ধিত ১৮ হাজার ৩৫০ জন জেলেকে সরকারের পক্ষ থেকে ৪২ কর্মদিবসের জন্য মোট ৫৬ কেজি চাল ও বাকি ২৩ কর্মদিবসের জন্য মোট ৩০ কেজি চাল প্রদান করা হবে। শুধুমাত্র সাগরে মাছ ধরায় নিষেধ আছে। এ সময় তারা বিভিন্ন নদনদীতে মাছ ধরতে পারবে।
১১ মে সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে মন্ত্রী বলেন, সামুদ্রিক মাছের প্রধান প্রজননকালে ৬৫ দিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ কার্যক্রমের উদ্দেশ্য হচ্ছে মাছের নির্বিঘ্ন প্রজনন নিশ্চিত করে মৎস্যসম্পদ বৃদ্ধি করা। এ সময় সব বাণিজ্যিক মৎস্য ট্রলারের সমুদ্রে যাওয়া বন্ধ রাখা হবে। যান্ত্রিক ও আর্টিসানাল মৎস্য নৌযান ঘাটে বাঁধা থাকবে।
স্থানীয় প্রশাসন, নৌবাহিনী, কোস্টগার্ড ও সশস্ত্র বাহিনী মাছ ধরা বন্ধ রাখার কাজে সহায়তা করবে।
Leave a Reply