দুই বছর আগে এক অভ্যুত্থানে জান্তা ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারে সামরিক ও সশস্ত্র প্রতিরোধ গোষ্ঠীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক প্রাণঘাতী যুদ্ধ দেখা গেছে। রাজধানী নেপিদো এবং থাইল্যান্ডের সীমান্তবর্তী শান রাজ্যে কিছু ভয়াবহ লড়াই হয়েছে।
কেএনডিএফ জানিয়েছে, শনিবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টার দিকে গোলাগুলির পরে জান্তার বিমান বাহিনী এবং আর্টিলারি গ্রামে প্রবেশ করে। তারা মঠের ভেতর লুকিয়ে থাকা গ্রামবাসীকে হত্যা করে। এতে অন্তত ৩০ জন বেসামরিক নাগরিক এবং তিনজন বৌদ্ধ ভিক্ষু নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দলটি।
স্থানীয় সংবাদপত্র কান্তরাওয়াদ্দি টাইমস কেএনডিএফ-এর একজন মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বলেছে, সেনাবাহিনী ভিক্ষুসহ সবাইকে মঠের সামনে সারবেঁধে দাঁড় করিয়ে নির্মমভাবে গুলি করে।
কেএনডিএফ-এর একটি ভিডিওতে অন্তত ২০টি মৃতদেহ মঠের পাশে স্তূপ করা অবস্থায় দেখা গেছে, যার মধ্যে রয়েছে বৌদ্ধ ভিক্ষুদের কমলা রঙের পোশাক পরা মরদেহ।
মৃতদেহগুলোতে একাধিক গুলির আঘাতের চিহ্ন ছিল বলে মনে হচ্ছে। ভিডিওটিতে মঠের দেয়ালে বুলেটের ছিদ্র দেখা গেছে। আশেপাশের কিছু বিল্ডিং এবং বাড়িঘরও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যাকে কেএনডিএফ সেনাবাহিনীর আক্রমণ বলে অভিযোগ করেছে।
এসব ঘটনার বিশদ বিবরণ যাচাই করা কঠিন, তবে নিরস্ত্র বেসামরিকদের বিরুদ্ধে আক্রমণের বর্বর প্রকৃতি মিয়ানমারের এই অংশে নতুন নয়। যেখানে অভ্যুত্থানের পর থেকে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ দেখা গেছে।
মিয়ানমার গত কয়েক দশক ধরে গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে, যা ২০২১ সালে অভ্যুত্থানের পর থেকে আরও খারাপ পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে। এতে প্রায় দেড় মিলিয়ন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে, ৪০ হাজার ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে, আট মিলিয়ন শিশু আর স্কুলে যাচ্ছে না এবং ১৫ মিলিয়ন লোক বিপজ্জনকভাবে খাদ্যের অভাবে রয়েছে বলে ধারণা করছে জাতিসংঘ।
পর্যবেক্ষণ গ্রুপ অ্যাসিস্টেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজোনারস অনুসারে, ভিন্নমতের বিরুদ্ধে জান্তার দমন অভিযানে দুই হাজার ৯০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
Leave a Reply