রোববার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, শনিবার রাতে রাজধানীর তেজগাঁও থানাধীন পশ্চিম রাজাবাজার ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন মোল্লাবাড়ী বস্তি এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো. সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ওরফে সিটু সাব্বির ওরফে সাগর (২৩), মো. রনি (২৬) এবং মো. বিজয় (৩৪)। তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের কাজে ব্যবহৃত ১টি ধারালো চাকু ও ১০টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানান, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে তেজগাঁও পানি ভবন সংলগ্ন ফুটপাতে পূর্ব পরিচিত রনির সাথে মো. ফারুক হোসেন আড্ডা দিচ্ছিলেন। পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ফারুক হোসেনকে গ্রেপ্তার রনি ও বিজয় কৌশলে বাসা থেকে বের করে নিয়ে আসে ও আড্ডার মাধ্যমে সময় ক্ষেপন করতে থাকেন। একপর্যায়ে গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন সাব্বির তাদের সাথে আড্ডায় যুক্ত হন।
এইচ এম আজিমুল হক বলেন, গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন সাব্বির ১ বছর কারাভোগের পর জামিনে এসে ২ দিনে ১২টি বিভিন্ন মডেলের মোবাইল ফোন ছিনতাই করেন। পরে নিহত ফারুক ও গ্রেপ্তারকৃতরা ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন বিক্রির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা প্রাপ্তির সম্ভাবনা উদযাপন করতে বারে গিয়ে মদ পান করতে চান। গ্রেপ্তার মূল অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন সাব্বির বার থেকে মদ এনে নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগির সময় ভিকটিম ফারুক হোসেনের সাথে বাক-বিতণ্ডা শুরু হয় এবং ছিনতাইকৃত মোবাইল ফোন বিক্রির বিষয়ে নিজেদের মধ্যে গালমন্দ হয়।
পূর্ব শত্রুতার আক্রোশে সাদ্দাম হোসেন সাব্বির নিজের কাছে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে ফারুক হোসেনের বাম পায়ের উরুতে আঘাত করে পালিয়ে যান। গুরুতর আহত অবস্থায় ফারুক হোসেন ফুটপাতে পড়ে থাকেন। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় ফারুক হোসেনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে রাত ২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
ডিসি এইচ এম আজিমুল হক বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাৎক্ষনিকভাবে তেজগাঁও থানার ২টি আভিযানিক টিম ঘটনাস্থল ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যায়। সংবাদ পেয়ে নিহত ফারুক হোসেনের আত্মীয়-স্বজনরাও হাসপাতালে যান। সুরতহাল ও পোস্টমর্টেম শেষে ভিকটিমের লাশ তার স্বজনদের বুঝিয়ে দেয়া হয়।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে ভিকটিমের স্ত্রী ও আত্মীয়-স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও হত্যাকাণ্ডে সাম্ভব্য জড়িতদের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়। এরপর তেজগাঁও থানার ২টি আভিযানিক টিম বিশেষ অভিযান চালিযে হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত মূল অভিযুক্ত ও অন্যান্য সহযোগীদের গ্রেপ্তার করে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের সাথে নিহত ভিকটিমের পূর্ব শত্রুতার আক্রোশের জের ধরে মূল অভিযুক্ত সাদ্দাম হোসেন সাব্বির অন্যান্য সহযোগীদের যোগসাজসে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটায়।
গ্রেপ্তার সাদ্দাম হোসেন সাব্বিরের বিরুদ্ধে ডিএমপি’র তেজগাঁও থানা ও হাতিরঝিল থানায় অস্ত্র, দস্যুতা ও মাদক সংক্রান্ত ৭টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার রনির বিরুদ্ধে ডিএমপি’র তেজগাঁও ও তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় অস্ত্র-মাদক, দস্যুতা ও ডাকাতি সংক্রান্তে ১৩টি মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার বিজয়ের বিরুদ্ধে ডিএমপি’র তেজগাঁও এবং তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাসহ দেশের বিভিন্ন থানায় অস্ত্র-মাদক, দস্যুতা ও ডাকাতি সংক্রান্তে ১৭টি মামলা রয়েছে।
Leave a Reply