আদানির বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার সময় কৃষি জমি নষ্টের অভিযোগ তুলেছিল পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ফারাক্কার চাষীরা। এ নিয়ে গত বছরের জুলাই মাসে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়ায় গ্রামবাসীরা।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ না দিয়ে জোরপূর্বক আম-লিচু বাগানের উপর গিয়ে বিদ্যুতের হাইটেনশ লাইন বাংলাদেশে নিয়ে যাচ্ছে আদানি। এর প্রেক্ষিতে গত বছরের জুলাই মাসে লুৎফর রহমান নামে এক ফল চাষী হাইকোর্টের দারস্থ হন। এদিকে ক্ষতিপূরণ না মেলায় আদানি গোষ্ঠী ও রাজ্য সরকারকে অভিযুক্ত করে হাইকোর্টের দারস্থ হয়েছেন ফারাক্কার ৩০ ফল চাষী। তাদের পক্ষে মঙ্গলবার মামলা দায়ের করেন সিনিয়র আইনজীবী ঝুমা সেন।
ভারতীয় টিভি চ্যানেল কলকাতা টিভি এবং ইটিভি জানায়, ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মাণাধীন আদানি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আগামী মার্চে বাংলাদেশে যে বিদ্যুৎ আসার কথা রয়েছে, এর ফলে আদানির বিদ্যুৎ পাওয়ার ভাগ্য অনিশ্চিত হয়ে পড়লো বাংলাদেশের জন্য।
ফারাক্কার চাষীদের পক্ষে এ মামলার আইনজীবী মানবধিকার সংগঠন এপিডিআরের কর্মী রণজিৎ সুর ভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গোটা প্রক্রিয়া বেআইনিভাবে করার কারণে জনস্বার্থে মামলা দায়ের হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের ওপর থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন যাবে, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে আদানির কোনো চুক্তি নেই। একইসঙ্গে যাদের জমির ওপর থেকে সঞ্চালন লাইন যাচ্ছে তাদের সঙ্গেও চুক্তি নেই। এমনকি তাদের সম্মতিও নেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, তাই আমরা আদালতের কাছে চারটি আবেদন রেখেছি।
১. আদানির বিদ্যুৎ প্রকল্পের ওপর আপাতত স্থগিতাদেশ দিতে হবে।
২. কোর্ট মনিটর এনকোয়ারি কমিটি গঠন করতে হবে।
৩. চাষিরা সম্মত হলে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের লিজ চুক্তির মাধ্যমে প্রতিবছর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে অথবা বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিক্রি করে আদানি যে লাভ করবে তার লভ্যাংশ চাষিদের দিতে হবে।
৪. গাছ কাটার জন্য পরিবেশের যে ক্ষতি হচ্ছে তার জন্যও উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে এবং জুলাই মাসে চাষিদের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধের সময় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেই চাষিদের সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।
Leave a Reply