1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  3. sarderamun830@gmail.com : Sarder Alamin : Alamin Sarder
  4. wpsupp-user@word.com : wp-needuser : wp-needuser
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৫০ অপরাহ্ন
নোটিশ :
বিভিন্ন জেলা,উপজেলা-থানা,পৈারসভা,কলেজ ও ইউনিয়ন পর্যায় সংবাদকর্মী আবশ্যক ।
সংবাদ শিরনাম :
বরিশাল ডিসি ঘাট দখলে মরিয়া চিহ্নিত অপরাধীরা নির্বাচিত হলে উপজেলার সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করবো- চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজিব রামুতে ভূমিদস্য সিরাজের অপকর্ম মামলা হওয়ার পরেও ধরা-ছোয়ার বাহিরে শেখর পরিবারের উদ্যোগে প্রয়াত সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত মানবিক কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদের উদ্যোগ, সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে ঈদ উপহার বিতরণ হিজলায় পুলিশ সদস্যদের ওপর মৎস্য অধিদপ্তরের অতর্কিত হামলা সুলভ মুল্যে ইফতার বুকিং নিচ্ছে ‘লবস্টার রেস্ট্রুরেন্ট ও কনভেনশন হল’  সুলভ মুল্যে মানসম্পন্ন ইফতার বিক্রি করছে ‘খাবার বাড়ি সুইটস এন্ড রেস্ট্রুরেন্ট’ বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এ্যাল্যায়েন্স (বিএমটিএ) পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ

কারাগারে ৪ বছরে সাড়ে ৩ শতাধিক বন্দির মৃত্যু

  • প্রকাশিত : শনিবার, ২১ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৪৯ 0 সংবাদ টি পড়েছেন
সুজন কৈরী // কারাগারের ভেতরে মৃত্যুর সংখ্যা দিনদিন বাড়ছে। গত চার বছরে প্রায় সাড়ে ৩০০ কারাবন্দীর মৃত্যু হয়েছে। সম্প্রতি এক দিনেই গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই বন্দীর মৃত্যু হয়। এ মৃত্যু নিয়ে এক সংস্থা দায় চাপাচ্ছেন অন্য সংস্থার ওপর।

কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, রিমান্ড ফেরত আসামিদের বেশিরভাগই অসুস্থ অবস্থায় কারাগারে আসেন। এরপর কিছুদিনের মধ্যে তাদের মৃত্যু হয়। আর পুলিশের পক্ষ থেকে হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়। যদিও কারা কর্তৃপক্ষের দাবি, কারাগারের ভিতর আসামি বা বন্দীদের ওপর নির্যাতন চালানোর কোনো সুযোগ নেই। তবে মানবাধিকার কর্মীদের মতে কারাগার অথবা পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য মতে, ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে গত বছরের জুলাই পর্যন্ত কারাগারে ৩২৮ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সাজাপ্রাপ্ত বন্দির সংখ্যা ১২৩ ও আটক ২০৫ জন। বছর হিসেবে ২০১৮ সালে ৭৪ জন, ২০১৯ সালে ৫৮ জন, ২০২০ সালে ৭৫ জন, ২০২১ সালে ৮১ জন ও ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত ৪০ জন বন্দির মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। আবার অনেক বন্দীর মৃত্যু হয়েছে যাদের বয়স সত্তরোর্দ্ধ। সঠিক চিকিৎসা না দেয়ার কারণে তারা দিন দিন মৃত্যুর দিকে ধাবিত হন। এছাড়া কারাগারে আত্নহত্যার মতো ঘটনাও রয়েছে। আবার কিছু ক্ষেত্রে রিমান্ড ফেরত আসামিরাও কারাগারে মারা যান। এক্ষেত্রে পুলিশ ও কারা কর্তৃপক্ষ দুই পক্ষই একে অপরকে দোষারোপ করে থাকেন।

এসব বিষয়ে কারা কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্যে পাওয়া যায়নি। তবে অসুস্থ অবস্থায় বন্দী বা আসামিদের নিকটস্থ হাসপাতালে নেয়ার পর মারা গেলে, সে সংক্রান্ত একটি মৃত্যু সনদ প্রদান করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ওইসব মৃত্যু সনদে তার মৃত্যুর কারণ হিসেবে বয়স বিবেচনায় বার্ধক্যজনিত কারণ এবং হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান-এরকম কারণ উল্লেখ করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যু সনদে ডায়াবেটিকস, উচ্চ রক্তচাপ জনিত কারণ ও কিডনী ও লিভার জটিলতার কারণ উল্লেখ করা হয়।

কারা অধিদপ্তরের একটি সূত্র জানায়, কিছু ক্ষেত্রে রিমান্ড ফেরত আসামিদের শরীরের বাহ্যিক অবস্থা দেখে তাদেরকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয়। মেডিকেল চেকআপের মাধ্যমে কারা কর্তৃপক্ষ ওইসব আসামিদের গ্রহণ করে। আবার কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালে বেশি অসুস্থ পাওয়া গেলে ওইসব আসামিকে গ্রহণ করার জন্য পুলিশের উচ্চ পর্যায় থেকে সুপারিশ আসে। তখন তাদের গ্রহণ করা হয় এবং একটি নোট রাখা হয়। এক্ষেত্রে ওই আসামি মৃত্যুবরণ করলে তখন কারা কর্তৃপক্ষকে দোষারপ করা হয়। এক্ষেত্রে ঢাকা পড়ে যায় পুলিশি নির্যাতন। এক তরফা দোষারোপ করা হয় কারা কর্তৃপক্ষকে।

অসুস্থতা বা আঘাতজনিত কারণে মৃত্যুর ক্ষেত্রে দায়িত্বরতদের অবহেলার কথা উল্লেখ করে কারাগারে চিকিৎসা সেবা দানে কর্মরত এক কর্মকর্তা জানান, আদালত থেকে যখন কোনো রোগী কারাগারে পাঠানো হয়, তখন সংশ্লিষ্ট বিচারক রোগীর বিষয়ে সবকিছু লিখে দেন। এ ক্ষেত্রে পুলিশকে দোষারূপের সুযোগ নেই। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘সম্প্রতি কারা অভ্যন্তরে রোগী দেখছিলাম। দেখলাম এক আসামির হাত ঝুলছে। তার অবস্থা খুব খারাপ দেখে কাগজপত্র দেখতে চাইলাম। দেখি ম্যাজিস্ট্রেট সেখানে লিখে দিয়েছেন, দ্রুত তাকে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হোক।’ তিনি বলেন, ওই রোগী আগেরদিন সন্ধায় কারাগারে আসেন। জেলার ও জেল সুপারের উচিত ছিলো কাগজপত্র দেখে কারাগারের গেট থেকেই তাকে পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। কিন্তু এটা করা হয়নি। এ কারণে রোগীটি সারারাত চিকিৎসাহীন অবস্থায় ছিলেন। এতে তার অবস্থা বেশ খারাপ হয়েছে। কারাগারে কর্মরত একজন ডাক্তার বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট, এবং ডাক্তার-নার্সদের পরামর্শকে গুরুত্ব দেয় না কারা কর্তৃপক্ষ। রোগীকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বাইরের হাসপাতালে পাঠানোর পারর্শ দেয়া হলে তা গ্রহণ করা হয় না। যখন অবস্থা জটিল আকার ধারণ করে বা রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তখন তাকে বাইরের হাসপালে পাঠানো হয়। এ সময় অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, রোগী রাস্তাতেই মৃত্যুবরণ করে। তিনি বলেন, যারা মারা যাচ্ছেন তাদের মধ্যে এমন কোনো রোগী নেই যে, যাকে কারা অভ্যন্তরের ডাক্তার ২-৪ বার ব্যবস্থাপত্র না দিয়েছে।

ডা. মোহাম্মদ মাহমুদুল কবীর বাসার গত ৩ ডিসেম্বর কারাগারের পরামর্শ বইয়ে লিখেন ‘নরসিংদী জেলা কারাগারে বন্দীদের মধ্যে স্ক্যাবিস (চুলকানি) এবং সব ধরনের চর্ম রোগের প্রাদুর্ভার দেখা দিয়েছে। এ রোগ দিন দিন বাড়ছে। এ বিষয়ে গত ১ আগস্ট কারা কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সিভিল সার্জন মহোদয়ও কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের কথা উল্লেখ করে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানো হলেও কারা কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। এতে কারাগারের চিকিৎসা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে।’

ওইদিন তিনি পরমর্শ বইয়ে অপর এক মন্তব্যে লিখেন, ‘অদ্য (গত ৩ ডিসেম্বর) নরসিংদী জেলা কারাগারে রোগী দেখার সময় কয়েদী ইফতেহার রাসেল আমার কাছে চিকিৎসা নিতে আসে। সে জানায়, সর্বপ্রধান কারারক্ষী হেলাল উদ্দিনের নির্দেশে সহকারী প্রধান কারারক্ষী আবু তাহের তাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এমতাবস্থায় এ ধরনের বিষয়য়ের প্রতি বিধি মোতাবেক সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হলো।’

গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দী ইদ্রিস আলী মোল্লা (৬২) অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান। তার মৃত্যু সনদে বার্ধক্যজনিত কারণে তার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ২৬ ডিসেম্বর ঢামেক হাসপাতালে সৈয়দ মোছাব্বের হোসেন (৫২) নামে এক আসামির মৃত্যু হয়। তার মৃত্যু সনদে বলা হয়েছে, উচ্চ রক্তচাপ ও দীর্ঘ দিন ধরে নানা ধরনের জটিল রোগে তার মৃত্যু হয়েছে। ১ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের বন্দী মফিজ বাবু (৬২) ঢামেক হাসপাতালে মারা যান। তার মৃত্যু সনদে মৃত্যুর কারণ হিসেবে একই ধরনের কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।

কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে গত বছরের ১১ আগস্ট একটি ডাকাতি মামলার আসামি আনোয়ার হোসেনের মৃত্যু হয়। কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, হার্ট অ্যাটাকে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে পরিবারের অভিযোগ, গ্রেপ্তারের পর পুলিশি নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে কারাগারে মারা গেছেন আনোয়ার। গত ৪ সেপ্টেম্বর মেহেরপুর কারাগারে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি তোফায়েল আহমেদের মৃত্যু হয়। কারা কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার।

সূত্রমতে, ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার লেখক মুশতাক আহমেদ ১০ মাস কারাবন্দি থাকা অবস্থায় গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে মারা যান। শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েচে। গত বছরের ১৩ মার্চ বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে হাজতি জহিরুল মারা গেলে অসুস্থতার কথা বলে কারা কর্তৃপক্ষ।

তবে তার বড় ভাই আলী আকবর গণমাধ্যমকে বলেন, ‘পিবিআইয়ের লোকজন জহিরুলকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে না দিয়ে ব্যাপক মারধর করলে কারাগারে মারা যায় সে। মারা যাওয়ার চার- পাঁচ দিন আগে কারাগারের মধ্যে কিছু লোক জোর করে তার ঘাড়ে ইনজেকশন দেয় বলেও পরিবারকে জানিয়েছিল জহিরুল।’

২০১৯ সালে পঞ্চগড় জেলা কারাগারে আইনজীবী পলাশ কুমার রায় আগুনে পুড়ে মারা গেলে কর্তৃপক্ষ আত্মহত্যা বলে জানায়। ওই সময় তার পরিবার আত্মহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে।

কারা সূত্র জানায়, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ফজর আলী ও ৩০ আগস্ট খোকা মিয়া নামের দুই বন্দী নরসিংদী কারাগারে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। এই দুইটি ঘটনায় নিচের পদের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

মানবাধিকার সংগঠক নূর খান লিটন বলেন, বিচারে দীর্ঘসূত্রতায় মানসিক চাপ, আন্তঃসামাজিক মর্যাদাগত চাপ ও ধারণক্ষমতার কয়েকগুণ বন্দি, রাতের বেলা হার্ট অ্যাটকসহ অন্যান্য গুরুতর অসুখে তাৎক্ষণিক ও যথাসময়ে চিকিৎসা না পাওয়া কারাগারে বন্দি মৃত্যুর কারণ। এছাড়া গ্রেপ্তারের পর থানা হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদের যে পদ্ধতি অর্থাৎ মারধর বা নির্যাতনের কারণে তাদের মৃত্যু হয়।

তিনি বন্দি মৃত্যু নিয়ে আরও বলেন, বন্দি মৃত্যু নিয়ে কারা কর্তৃপক্ষ সব সময় গৎবাঁধা কথা বলে। তারা ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ অথবা ‘হার্ট অ্যাটাক’ এর কথা বলে থাকে। কারা হেফাজতে মারা যাক আর পুলিশ হেফাজতে মারা যাক-এসব মৃত্যুর ঘটনায় ময়নাতদন্ত বাধ্যতামূলক এবং একটি কমিটি গঠন করে ময়নাতদন্ত করতে হবে।

এই মানবাধিকার সংগঠক আরও বলেন, কারাগারে একজন সাধারণ বন্দি অসুস্থ হলে প্রাথমিক পর্যায়ে তেমন আমলে নেয়া হয় না। যখন চুড়ান্ত অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন দৌড়-ঝাঁপ শুরু হয়। এ ছাড়া প্রকৃত অসুস্থ রোগীরা হাসপাতালে জায়গা পায় না। এখানে যার টাকা আছে, তারা সহজেই চিকিৎসা সেবা পায়।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ