মাহসা আমিনির মৃত্যুর পর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে যে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তা ১৯৮৯ সালের ইসলামী বিপ্লবের পর থেকে ইরানের নেতৃত্বের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। যা একটি আন্তর্জাতিক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
নরওয়ে ভিত্তিক গ্রুপ ইরান হিউম্যান রাইটস (আইএইচআর) ইরানের অভ্যন্তরে সহিংসতার সর্বশেষ তালিকায় বলেছে, দেশব্যাপী নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ৪১৬ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ৫১ শিশু এবং ২১ জন নারী রয়েছে।
আইএইচআর বলেছে, গত সপ্তাহে ৭২ জন প্রাণ হারিয়েছে, যার মধ্যে ৫৬ জন পশ্চিম কুর্দি-জনবসতিপূর্ণ এলাকাযর বাসিন্দা। যেখানে সাম্প্রতিক দিনগুলোতে প্রতিবাদ কর্মকাণ্ড বেড়েছে।
নরওয়ে-ভিত্তিক মানবাধিকার গোষ্ঠী, যা ইরানের কুর্দি অঞ্চলগুলিতে ফোকাস করে, ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীকে মেশিনগান দিয়ে বিক্ষোভকারীদের উপর সরাসরি গুলি চালানো এবং আবাসিক এলাকায় গোলাবর্ষণের অভিযোগ করেছে।
এদিকে, ইরানের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর দমন-পীড়ন দেশটির গুরুতর পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে বলে সর্তক করেছেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার।
মঙ্গলবার জেনেভায় এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার ভলকার তুর্ক বলেন, গত সপ্তাহে দুই শিশুর মৃত্যুসহ ইরানের বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কঠোর দমনাভিযান দেশটির গুরুতর পরিস্থিতিকে সামনে নিয়ে এসেছে।
অন্যদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় থেকে ইরানের এই গুরুতর বিপজ্জনক পরিস্থিতির ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়াও বিক্ষোভকারীদের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর না করার জন্য ইরান কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ।
উল্লেখ্য, গত ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ হেফাজতে মারা যান মাসা আমিনি। ঠিকমতো হিজাব না পরায় ১৩ সেপ্টেম্বর রাজধানী তেহরানে তাকে ইরানের ‘নৈতিকতা পুলিশ’ গ্রেপ্তার করেছিল।
পুলিশের হেফাজতে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার পর তাকে হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তিনদিন কোমায় থাকার পর মৃত্যু হয় তার। প্রথমে বিক্ষোভ ইরানের কুর্দি অধ্যুষিত উত্তরপশ্চিমাঞ্চলে শুরু হলেও ক্রমে তা দেশটির ৮০টি শহর ও নগরে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৯ এ পেট্রলের দাম নিয়ে হওয়া বিক্ষোভের পর দেশটির দেখা সবচেয়ে বড় প্রতিবাদ এটি।
সূত্র: রয়টার্স, এএফপি
Leave a Reply