নিজস্ব প্রতিবেদক // নরসিংদীর মাধবদীতে পায়ের সামনে থুতু ফেলাকে কেন্দ্র করে মোবারক হোসেন ওরফে শাহ আলম (১৭) নামে এক কিশোরকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে।
গত শনিবার (১২ নভেম্বর) মধ্যরাতে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই কিশোর মারা যায়। এর আগে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মাধবদীর দক্ষিণ বিরামপুর এলাকার আওয়াল মোল্লার চায়ের দোকানের সামনে তাকে কোপানোর ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে মাধবদী থানা পুলিশ।
নিহত মোবারক নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার সাতগ্রাম ইউনিয়নের বাহাদুরপুর গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। সে মাধবদী এসপি ইনস্টিটিউশন থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে।
নিহত কিশোরের চাচাতো ভাই সেলিম হোসেন বলেন, যারা আমার ভাইকে এত লোকের সামনে কুপিয়ে হত্যা করেছে, তারা প্রত্যেকেই স্থানীয় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। তাদের সবার বয়স ১৫ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। পায়ের সামনে থুতু পড়ার মতো একটি তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে যারা তাকে হত্যা করেছে, আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
নিহত কিশোরের স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় মোবারক হোসেন বাড়ি থেকে বেরিয়ে আওয়াল মোল্লার চায়ের দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় সে থুতু ফেললে তা অপর এক কিশোরের পায়ের সামনে গিয়ে পড়ে। এতে ওই কিশোর ও তার সহযোগী অপর কিশোর ক্ষুব্ধ হলে তাদের মধ্যে তর্কবিতর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এক পর্যায়ে সেখান থেকে মোবারক চলে যায়।
এরই জের ধরে শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে ওই কিশোরসহ আরও ১০ থেকে ১২ জন কিশোর একই চায়ের দোকানের সামনে ওত পেতে থাকে। এসময় দোকানটির সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মোবারকের ওপর হামলে পড়ে তারা।
এক পর্যায়ে তারা চাপাতি, ছুরি ও দা দিয়ে মোবারককে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে। আশপাশের লোকজনের সামনেই এ ঘটনা ঘটে, তবে এসময় তাকে বাঁচাতে কেউ এগিয়ে আসেনি।
এ সময় মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত পেয়ে মোবারক মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে ফেলে পালিয়ে যায় কিশোরেরা। পরে আশপাশের লোকজন এসে মোবারককে উদ্ধার করে মাধবদীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।
সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে গতকাল দিবাগত রাত ১২টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রকিবুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি যাচাই-বাছাই শেষে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এরই মধ্যে পুলিশ অভিযান চালিয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত চারজনকে আটক করেছে। মামলা হওয়ার পর তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হবে।
Leave a Reply