বন বিভাগের সহায়তায় নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) ওই কচ্ছপের বাচ্চা সংরক্ষণ ও অবমুক্ত করেছে। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নেকমর প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা (এনআরএম) ম্যানেজার আবদুল কাইয়ুম বলেন, গত ১৫ জানুয়ারি থেকে অলিভ রিডলি জাতের কচ্ছপ সৈকতে ডিম দিয়েছিল। সেন্টমার্টিনসহ কক্সবাজারের বিভিন্ন সমুদ্র উপকূল থেকে ডিম সংগ্রহ করে কচ্ছপ নিয়ে কাজ করে নেকম। নেকম কর্মীরা এসব ডিম সংগ্রহের পর হ্যাচারিতে রেখে বালির নিচে বিশেষ কায়দায় ফুটানোর উদ্যোগ নেয়। ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয়। সেভাবে রোববার বিকেলে দক্ষিণ বনবিভাগের ইনানীর উত্তর সোনারপাড়া হ্যাচারিতে ১২০টি ও পেঁচারদ্বীপ হ্যাচারিতে ৬৫টি বাচ্চা বালির নিচ থেকে উঠে আসে। এসব বাচ্চা সোমবার দুপুরে সাগরে অবমুক্ত করা হয়। সৈকতের এ বেল্টে আরও সাড়ে ৫ হাজার ডিম ফুটার অপেক্ষায় রয়েছে।
নেকমের প্রজেক্ট ডিরেক্টর ড. শফিকুর রহমান বলেন, সামুদ্রিক কচ্ছপের ডিম সংরক্ষণ ও প্রজনন প্রক্রিয়ার তদারকি করে নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্ট। বেশ কয়েক বছর ধরে সেন্টমার্টিন ও কক্সবাজার সৈকত থেকে কচ্ছপের ডিম সংগ্রহ করছে সংস্থাটি। সেন্টমার্টিনে এ পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। কক্সবাজার অংশে সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৬ হাজার। দুই মাস পর ডিমগুলো থেকে বাচ্চা বের হয়। পরে বাচ্চাগুলো সাগরে অবমুক্ত করা হয়।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সরোয়ার আলম বলেন, কচ্ছপ প্রকৃতির সুইপার। সমুদ্রের আবর্জনাগুলো ভক্ষণ করে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা রাখে কচ্ছপ। কিন্তু আমাদের অসচেতনতায় নিজের আবাসস্থল হারাচ্ছে এ উপকারী প্রাণীটি। নিষিদ্ধ জালে মাছ শিকারকালে আটকা পড়ে মারা যায় কচ্ছপ। পর্যটন বিকাশের কারণে কক্সবাজারের সমুদ্র উপকূলে অতিরিক্ত আলোকায়নে কূলে ফিরে কুকুরের আক্রমণেও মরছে কচ্ছপ। এসব নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হলেও আমরা কচ্ছপ প্রজননে গুরুত্বারোপ করছি। তারই ফল স্বরূপ আজকের কচ্ছপের বাচ্চা অবমুক্ত।
কচ্ছপ অবমুক্ত করণকালে কক্সবাজার উত্তর বনবিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. আনোয়ার হোসেন, সহ ব্যবস্থাপনা কমিটির (সিএমসি) সভাপতি অ্যাডভোকেট আয়াছুর রহমানসহ বন বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান বলেন, প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিনকে কচ্ছপসহ সব সামুদ্রিক প্রাণীর জন্য নিরাপদ প্রজনন ও আবাস স্থল হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। পৃথিবীকে মানুষের বসবাস উপযোগী রাখতে হলে প্রানীকূলের উপস্থিতি জরুরি। আমাদের উচিত প্রকৃতি রক্ষায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে ভূমিকা রাখা।
উল্লেখ্য, গত ২৪ মার্চও সেন্টমার্টিন বঙ্গোপসাগরে ৬০টি বাচ্চা কচ্ছপ অবমুক্ত করেছে নেকম।
Leave a Reply