1. faysal.rakib2020@gmail.com : admin :
  2. admin@zzna.ru : admin@zzna.ru :
  3. sarderamun830@gmail.com : Sarder Alamin : Alamin Sarder
  4. wpsupp-user@word.com : wp-needuser : wp-needuser
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫১ অপরাহ্ন
নোটিশ :
বিভিন্ন জেলা,উপজেলা-থানা,পৈারসভা,কলেজ ও ইউনিয়ন পর্যায় সংবাদকর্মী আবশ্যক ।
সংবাদ শিরনাম :
বরিশাল ডিসি ঘাট দখলে মরিয়া চিহ্নিত অপরাধীরা নির্বাচিত হলে উপজেলার সার্বিক উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করবো- চেয়ারম্যান প্রার্থী রাজিব রামুতে ভূমিদস্য সিরাজের অপকর্ম মামলা হওয়ার পরেও ধরা-ছোয়ার বাহিরে শেখর পরিবারের উদ্যোগে প্রয়াত সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরনের দশম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত মানবিক কাউন্সিলর সুলতান মাহমুদের উদ্যোগ, সাড়ে ৪ হাজার মানুষকে ঈদ উপহার বিতরণ হিজলায় পুলিশ সদস্যদের ওপর মৎস্য অধিদপ্তরের অতর্কিত হামলা সুলভ মুল্যে ইফতার বুকিং নিচ্ছে ‘লবস্টার রেস্ট্রুরেন্ট ও কনভেনশন হল’  সুলভ মুল্যে মানসম্পন্ন ইফতার বিক্রি করছে ‘খাবার বাড়ি সুইটস এন্ড রেস্ট্রুরেন্ট’ বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এ্যাল্যায়েন্স (বিএমটিএ) পূর্ণাঙ্গ কমিটি প্রকাশ

বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অর্থ আত্মসাৎ !

  • প্রকাশিত : বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ, ২০২৩
  • ৫৩ 0 সংবাদ টি পড়েছেন

অনলাইন ডেস্কঃ বরগুনায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে উপকূলের রক্ষাকবচ বেড়িবাঁধ সুরক্ষায় তিন কোটি টাকার বৃক্ষরোপণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ফলজ, বনজ ও ঔষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতীর ৮৮ হাজার বৃক্ষরোপণ করার কথা থাকলেও নামমাত্র গাছ লাগিয়ে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে কোটি টাকা।

সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার, নির্বাহী প্রকৌশলীসহ খোদ অফিস কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অর্থ আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস সংশ্লিষ্টদের।

সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার ৬টি উপজেলার ২২টি পোল্ডারের অধীনে বেড়িবাঁধ রয়েছে ৮০৫ কিলোমিটার। ঝড়, জলোচ্ছ্বাস ও বিভিন্ন দুর্যোগের হাত থেকে উপকূলের রক্ষাকবচ এই বেড়িবাঁধ সুরক্ষিত করার জন্য তিনটি কার্যাদেশের মাধ্যমে প্রায় তিন কোটি টাকার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

কর্মসূচির অধীনে ২০২০-২০২১ অর্থবছরে বার্ষিক মেরামত খাতের অর্থে বরগুনার ৬টি উপজেলায় ৮৮ হাজার বৃক্ষরোপণ করা হয়। তিনটি কার্যাদেশে বৃক্ষরোপণের জন্য ব্যয় নির্ধারণ করা হয় প্রায় ৩ কোটি টাকা। বৃক্ষরোপণের পাশাপাশি ৬ মাসের পরিচর্যারও দায়িত্ব দেওয়া হয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, বৃক্ষরোপণের জন্য দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এ কাজ বাস্তবায়নের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়।

এরমধ্যে নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ২টি ও বকশি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ১টি। প্রথম কার্যাদেশটিতে নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ৯৪ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯১ টাকার বিনিময়ে পাথরঘাটা, বামনা, বেতাগী ও বরগুনা সদর উপজেলার পোল্ডারে বৃক্ষরোপণ করতে বলা হয়েছে। দ্বিতীয় কার্যাদেশে বকশি এন্টারপ্রাইজকে ৯৪ লাখ ৫৬ হাজার ৬৭৯ টাকার বিনিময়ে বরগুনা সদর উপজেলায় বৃক্ষরোপণ করতে বলা হয়েছে।

তৃতীয় কার্যাদেশে পুনরায় নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেডকে ৯৪ লাখ ৩৯ হাজার ৪৭৫ টাকায় আমতলী ও তালতলী উপজেলায় বৃক্ষরোপণ করতে বলা হয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী মেহগনি, টিক, শাল, চম্বল, আম, কাঁঠাল, লিচু ও কুলগাছ লাগানোর কথা রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাগজ-কলমে বরগুনার ৬টি উপজেলার সব কটিতেই কমবেশি বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবে রয়েছে এর ভিন্ন রূপ। কয়েকটি পোল্ডারে নামমাত্র গাছ লাগানো হলেও অধিকাংশ পোল্ডারেই লাগানো হয়নি। যেসব পোল্ডারে গাছ লাগানো হয়েছে সেগুলোও পরিচর্যার অভাবে নষ্ট হয়েছে। অথচ বৃক্ষরোপণের কার্যাদেশ অনুযায়ী বৃক্ষরোপণের সঙ্গে ৬ মাসের পরিচর্যাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। পোল্ডার ভিত্তিক গাছ লাগানোর কথা থাকলেও কোন পোল্ডারে কত গাছ লাগাবে সেই বিষয়টি উল্লেখ করা হয়নি। তাই কর্মকর্তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়েই দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হয়েছে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর নানামুখী কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ অনুসরণ না করেই টেন্ডার ছাড়াই প্রায় তিন কোটি টাকার বৃক্ষরোপণের দায়িত্ব দেওয়া হয় তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলমের পছন্দসই ঠিকাদার প্রকৌশলী মাইনুদ্দিন আসাদ নামের এক ব্যক্তিকে।

কাজ প্রায় শেষের পথে বিষয়টি নিয়ে জানাজানি হলে এই কাজের টেন্ডার আহ্বান করা হয়। টেন্ডারে নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেড ও বকশি এন্টারপ্রাইজ নামের দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এই কাজ পায়। অভিযোগ রয়েছে স্থানীয় ঠিকাদার মাইনুদ্দিন আসাদের সঙ্গে পরামর্শ করেই এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দুটোকে টেন্ডার দাখিল করতে বলা হয়। টেন্ডার অনুযায়ী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হলেও এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ছিল না বৃক্ষরোপণের পূর্ব অভিজ্ঞতা।

অভিযোগ উঠেছে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলম, ভারপ্রাপ্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বিপন সাহা, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম সোহাগ ও বরগুনার স্থানীয় ঠিকাদার প্রকৌশলী মাইনুদ্দিন আসাদসহ কাজ পাওয়া দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এই কাজ বাস্তবায়ন করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলীর প্রত্যক্ষ মদদে কিছু কিছু পোল্ডারে নাম মাত্র গাছ লাগিয়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ছাড়াও একই সময় উপকূলীয় বেড়িবাঁধ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বরগুনা সদর উপজেলা ও পাথরঘাটা উপজেলায় ১ লাখ ৫০ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষরোপণ করা হয়। অভিযোগ রয়েছে নির্বাহী প্রকৌশলীর তত্ত্বাবধানে এই প্রকল্পের গাছের ছবি দেখিয়ে বিল উত্তোলন করা হয়েছে।

কার্যাদেশ অনুযায়ী ৮৮ হাজার গাছ লাগাতে ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২ কোটি ৮৩ লাখ ৬৪ হাজার ৫৪৫ টাকা। এতে প্রতিটি গাছের পেছনে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২২ টাকার কিছু বেশি।

বর্তমান বাজার মূল্য যাচাই করে দেখা গেছে যেসব গাছ লাগানো হয়েছে রোপণ উপযোগী এই সব গাছ প্রতি ৫০ থেকে ১২০ টাকা পর্যন্ত সর্বোচ্চ বাজার দরে বিক্রি করা হচ্ছে বরগুনার হাটবাজারগুলোতে। বাজার দরের সর্বোচ্চ দাম ১২০ টাকা অনুযায়ী গাছের মূল্য দাঁড়ায় ১ কোটি ৫৬ হাজার টাকা। বৃক্ষরোপণ ও পরিবহন ব্যয় বাদ এসব গাছ লাগাতে আরও অর্ধকোটি টাকা ব্যয় হলেও বাকি টাকা কোথায় গেল?

সরেজমিনে বরগুনার সব পোল্ডার ঘুরে দেখা গেছে, বরগুনা সদর উপজেলার এম বালিয়াতলী ইউনিয়নের দুটি বেড়িবাঁধে গাছের দৃশ্যমান অস্তিত্ব রয়েছে। বাকি পোল্ডারগুলোতে কোনো গাছে অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। অনেক পোল্ডারে কোনো গাছ লাগানোই হয়নি বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

সদর উপজেলার গোলবুনিয়া খেয়াঘাটের দক্ষিণ পাশের বাসিন্দা জয়নাল, আবুল, কাশেম, ছগিরসহ স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা বলেন, প্রতি বছর ভাঙনের কবলে আমাদের সবকিছু হারাতে হয়। বেড়িবাঁধ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু শুনেছি সেই বেড়িবাঁধ সুরক্ষার জন্য গাছ লাগানো হয়েছে কিন্তু আমরা চোখে কোনো গাছ দেখিনি। গাছগুলো আমাদের এখানে লাগিয়ে যদি আমাদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হতো তাহলে আমরা রক্ষনাবেক্ষন করতাম।

এ বিষয়ে বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নেশনটেক কমিউনিকেশন লিমিটেড ও বকশি এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। তবে বরগুনায় এদের পক্ষ হয়ে কাজ বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার প্রকৌশলী মাইনুদ্দিন আসাদ বলেন, প্রাক্কলন অনুযায়ী যেখানে যেখানে গাছ লাগানোর কথা সব জায়গাতেই আমরা গাছ লাগিয়েছি। পরে গাছ নষ্ট হয়ে গেলে কিংবা কেউ নিয়ে গেলে সে দায়ভার তো আমাদের না।

অন্যের লাইসেন্সে পাওয়া কাজ কীভাবে আপনি বাস্তবায়ন করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঠিকাদারি করতে গেলে একজন ঠিকাদারের সঙ্গে অন্য আরেকজন ঠিকাদারের ভালো সম্পর্ক থাকে সেই সম্পর্কের জায়গা থেকেই আমি তাদের লাইসেন্স সংগ্রহ করে এখানে টেন্ডার ড্রপ করি। টেন্ডার হওয়ার আগেই অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ করে ফেলেছি, আপনি কীভাবে নিশ্চিত হলেন কাজ আপনিই পাবেন এমনটা জানতে চাইলে তিনি জানান, এই টেন্ডারে অন্য কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করেছিল কি না আমার জানা নেই। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওপর মহল থেকে গাছ লাগানোর জন্য চাপ আসায় তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী আমাকে গাছ লাগানোর জন্য বললে আমি লাগিয়ে দিই।

তদারকির দায়িত্বে ছিলেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম সোহাগ। তিনি বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে পারব না। এর জন্য নির্বাহী প্রকৌশলী মহোদয় আছেন তিনি কথা বলবেন। আমি একটি পোল্ডারের দায়িত্বে ছিলাম সেখানে ঠিকঠাক গাছ লাগানো হয়েছে। বাকিদের খবর আমি জানি না।

এ বিষয়ে তৎকালীন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী বিপন সাহার মুঠোফোনে একাধিকবার সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বৃক্ষরোপণের নামে যেটি করা হয়েছে সেটি পুকুরচুরি। জনগণের টাকায় গাছ লাগিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ঠিকাদারদের যোগসাজশেই এই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কাছে দাবি থাকবে বিষয়টি তদন্ত করে এহেন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিলসহ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক। তা না হলে ক্রমাগত আরও দুর্নীতি বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনা কার্যালয়ের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড পটুয়াখালী সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সবিবুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি, বিষয়টি খোঁজ-খবর নিয়ে দেখব। এ বিষয়ে যদি কোনো অনিয়ম হয়ে থাকে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

‍এই ক্যাটাগরির ‍আরো সংবাদ