মেহেন্দিগঞ্জ প্রতিনিধি // ভালো বেতনে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে মেহেন্দিগঞ্জের দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়নের দিনমজুর মো.আমিরুল ইসলামকে সৌদি আরব নেওয়ার কথা বলেন একই ইউনিয়নের দেলোয়ার হাওলাদার, সোহেল হাওলাদার, শিপন হাওলাদার নামের এক দল দালাল। তাদের কথায় চিন্তাভাবনা না করে রাজি হয়ে যান গ্রামের সহজ সরল আমিরুল ইসলাম এর পরিবার। ধার দেনা, গহনা বিক্রি আর জমি বন্ধক রেখে দালালের চাহিদা মতো সাড়ে ৪ লাখের মতো টাকা দিয়ে দালালের মাধ্যমে চলতি বছরের মার্চ মাসে বিদেশে যান আমিরুল ইসলাম। আমিরুল ইসলাম ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজনকে দালালরা সৌদি আরব নেন। বিদেশে নেওয়া পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। কিন্তু দেশটিতে যাওয়ার পর সব কিছু বদলে যেতে থাকে। কাজের কথা বলে বিদেশ পাঠিয়ে কাজও দেয়নি এবং বৈধ কোন কাগজপত্রও দেয়নি। এর ফলে ৫ মাসের মাথায় সৌদির পুলিশের হাতে আটক হয়ে জেল খাটার পর আমিরুল ইসলামকে দেশে পাঠিয়ে দেয়। ভালো কাজ দেওয়ার কথা ছিল, মাস শেষে বেতন হবে বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭০ হাজার টাকা । থাকা-খাওয়া সব মালিক বহন করবে।
কিন্তু কাজ না পাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে যাওয়া এই যুবকের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। এই ঘটনায় বিচার দাবী করে মেহেন্দিগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন আমিরুল ইসলাম। সরকার জনগণের সুবিধার জন্যই ২০১৩ সালে বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসী আইন প্রণয়ন করেছে। এই আইনটি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়েছে। বিদেশগামী কোনো শ্রমিক প্রতারণার শিকার হলে এ আইনে এর প্রতিকারের সুযোগ রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সকালে মেহেন্দিগঞ্জে স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করতে আসেন প্রতারণার শিকার যুবক আমিরুল ইসলাম। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। সরকার এবং প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চেয়েছেন তিনি। যে টাকা দালালরা নিয়েছে তা যেন ফেরত পান এবং যাদের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হলেন তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও চান এই যুবক। অভিযোগে প্রতারণার শিকার আমিরুল ইসলাম জানান, তিনি বৈধভাবে সৌদি গেলেও সেখান থেকে প্রতারণার শিকার হয়ে দেশে ফিরে এসেছেন। সম্রাট নামে আরো একজন প্রতারণার শিকার হওয়ার কথা জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, বাড়ি যেতে পারি না।
ভয় দেখায় দালালদের পরিবার। এখন দেশে আসছি কিন্তু কিছু করে খাবো সেই সুযোগও নাই। কোনো আয় নেই। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। স্থানীয় একাধিক জনপ্রতিনিধি বলেন, বৈধভাবে গিয়ে এমন বেশ কয়েকজন প্রতারিত হয়ে দেশে চলে আসছেন। তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারণ এরা সবাই ঋণগ্রস্ত। পুরোপুরি নিঃস্ব হয়ে গেছেন তারা। সৌদি থেকরও মোশাররফ সরদার, মিরাজ চৌকিদার, বাদল চৌকিদার বলেন, আমরাও প্রতারণার শিকার। আমরাও দেশে চলে আসবো। এদের বিরুদ্ধে এলাকায় এমন দালালীর আরো অভিযোগ রয়েছে।
Leave a Reply