
নিজস্ব প্রতিবেদক
দায়িত্ব পালনে অনড় অবস্থানে রয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতয়ালী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হুমায়ুন। থানায় যোগদানের পরপরই নিজের ওপর আরোপিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনে সক্রিয় ভুমিকা পালন করছেন তিনি। সেবাপ্রত্যাশীদের সেবায় নিরলস কাজ করছেন হুমায়ুন। সম্প্রতি একশ্রেনীর অসাধু মহলের অপকৌশলের শিকার হয়েছেন তিনি বলে অনুসন্ধান ও অভিযোগে উঠে এসেছে। জানা গেছে, সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নে বিট পুলিশিং অফিসার হিসেবে কর্মরত রয়েছেন হুমায়ুন। এ সুবাদে ঐ এলাকার নানা অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়মানুযায়ী তিনিই বিবেচিত হবেন। এরই ধারাবাহিকতায় চরমোনাই ইউনিয়নে চরহোগলা এলাকায় ৯ নং ওয়ার্ডে প্রেমঘটিত ঘটনায় প্রেমিকের সাথে প্রেমিকার পলায়নে গত ১৫ তারিখে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ঐ মেয়ের বাবা জহির হোসেন শামীম। তার মেয়ে মাইশা (১৭ বছর ৫ মাস) প্রেমিক ছানিম হাওলাদারের সাথে বরিশাল ত্যাগ করেন। ছানিম একই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের জসিমের ছেলে।
জানা গেছে, মাইশার বাবা জহির থানায় অভিযোগ দায়ের করলে দায়িত্বপ্রাপ্তির পর থেকেই তাকে উদ্বারে প্রচেষ্টা চালান এসআই হুমায়ুন। তিনি সানিমের মোবাইল নম্বরের সিডিয়ার চেক করলে সেখানে তার দুই বন্ধু রাফি তুষারের সন্ধান পান। একই সাথে শহিদুল নামের এক অটোচালকেরও নম্বর উঠে আসে। শহিদুলের দেয়া তথ্য মতে, ১৫ তারিখ সানিম তার প্রেমিকা মাইশাকে নিয়ে অটোভাড়া করে বরিশাল লঞ্চঘাটে যান। তাদের সহযোগী হিসেবে ছিলেন রাফি ও তুষার । সানিমকে না পেলেও রাফি ও তুষারকে বরিশালেই পান এসআই হুমায়ুন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে জিজ্ঞাসাবাদে ১৭ তারিখ সন্ধায় দু’জনকে থানায় নিয়ে আসেন। একইসাথে সানিম ও মাইশা কোথায় গিয়েছেন বলেও জানতে চাওয়া হয়। এসময় তারা জানায়, দু’জনেই স্বেচ্ছায় চট্রগ্রামে গিয়েছেন। তাদের সাথে পুর্ব-সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের সানিম ফোন দিয়েছিল বলে তার সাথে আমরা লঞ্চঘাটে যাই।
অভিযোগে জানা গেছে, ১৮ তারিখ সকালে মাইশাকে উদ্বার করে দিবেন বলে জানিয়ে চরমোনাই ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মামুন ও সাবেক ইউপি সদস্য আবুল হোসেন থানায় আসেন। তারা এসআই হুমায়ুনকে জানান, রাফি ও তুষারকে নিয়ে তাদের জিম্মায় নিয়ে যেতে চান ও একইসাথে মাইশাকে তারা উদ্বার করে দিবেন বলে স্টাম্পে স্বাক্ষর করেন। এসময় তারা রাফি ও তুষারকে নিয়ে যান।
এদিকে ঘটনার দু’দিন পরই অর্থাৎ ২০ তারিখ সকালে মাইশাকে নিয়ে থানায় আসেন দুই ইউপি সদস্য । এসময় তাদের সাথে মাইশার বাবাও ছিলেন। যেহেতু স্বেচ্ছায় প্রেমিকের সাথে মাইশা চলে গিয়েছিল এজন্য কারও বিরুদ্ধে কোন অভিযো্গ দিবেন না জানিয়ে লিখিত দিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে চলে যান বাবা জহির।
এদিকে রাফি ও তুষারকে দুই ইউপি সদস্য মাইশাকে উদ্বার করে দিবেন জানিয়ে এ শর্তে থানা থেকে নিয়ে গেলেও একটি মহল এস.আই হুমায়ুনকে নিয়ে মিথ্যা অপ-প্রচার চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি জানান, দুই ইউপি সদস্য মাইশাকে উদ্বার করে দিবেন জানিয়ে রাফি ও তুষারকে লিখিত দিয়ে তাদের জিম্মায় নিয়ে যান। সেখানে কোন অর্থের লেনদেন আমি করিনি। অথচ আমাকে নিয়ে অহেতুক ঘুষ বাণিজ্যের মিথ্যা অপ-প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে একটি মহল। অভিযোগ প্রাপ্তির পর থেকে আমি মাইশাকে উদ্বারে তৎপর হই। যার ধরুন সিডিআরের মাধ্যমে রাফি আর তুষারকে সহযোগীতাকারি হিসেবে চিহ্নিত করতে পারি। সে অনুযায়ী থানায় তাদের নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদ করি। তাদের দেয়া তথ্য মতে, মাইশা ও সানিমের সাথে আগে থেকেই প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সানিম তাদের ফোন দিলে তারা লঞ্চঘাটে উভয়কে এগিয়ে দিয়ে আসেন বলেও জানান তারা। এদিকে মাইশাকে উদ্বার করে দিবেন শর্তে রাফি ও তুষারকে লিখিত দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যান দুই ইউপি সদস্য । তারাও তাদের শর্তানুযায়ী মাইশাকে উদ্বার করে থানায় নিয়ে আসেন। এরপর তাকে বাবার জিম্মায় দিয়ে দেয়া হয়। মাইশার বাবাও কারও ওপর অভিযোগ না দিয়ে মেয়েকে নিয়ে চলে যান। এসময় আমি রাফি , তুষার কারও বাবার কাছ থেকে কোন অর্থ গ্রহণ কিংবা দাবিও করিনি। আমি শুধু আমার ওপর আরোপিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছি। আমাকে অহেতুকভাবে ফাঁসাতে একশ্রেনীর অসাধু মহল আমার ইতিবাচক কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধে নানান অপকৌশল অবলম্বন করে বিভিন্ন মাধ্যমে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার মান ক্ষুন্ন করেছেন। এ বিষয়ে আমি সংশ্লিস্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
এদিকে জানা গেছে, কোতয়ালী মডেল থানায় যোগদানের পরপরই এসআই হুমায়ুন নিজের ওপর আরোপিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেছেন। অভিযোগপ্রাপ্তির পরপরই জনগণকে কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রদানে সক্রিয়ভাবে ভুমিকা পালন করছেন। যার ধরুন সংশ্লিস্ট থানায় একজন চৌকস কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছেন তিনি। আর ইতিবাচক এ কর্মযজ্ঞকে প্রশ্নবিদ্ধে অসাধুক এক মহল ফায়দা লুটতে ব্যর্থ হয়ে নানা অপকৌশল অবলম্বন করছেন বলেও জানান অন্যান্য সহকর্মীরা।
Leave a Reply