নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশাল মহানগর বিএনপি। সাংগঠনিক কার্যক্রম চাঙ্গায় চলতি বছরে প্রাথমিক পর্যায় গঠিত হয় আহবায়ক কমিটি। পর্যায়ক্রমে গতি ফেরাতে সেই কমিটি সক্রিয় ও ত্যাগীদের সমন্বয়ে রুপ নেয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে। কেন্দ্র যোগ্যদের স্থান দেয় কমিটিতে। সাহসীকতার সাথে যারা দলের দুঃসময়ে অগ্রভাগ থেকে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের হামলা-মামলা ও নানা ধরণের হয়রানী উপেক্ষা করেও নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদেরকেই মুল্যায়ন করেছে দলের সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারনী পর্যায়।
সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীলতায় সক্রিয়দের ওপরই নগর বিএনপি’র দায়িত্বভার তুলে দেয়া হয়। দলের ভাবমুর্তি বজায়ে ও সাধারণ মানুষের আস্থা ফেরাতে নানাবিধ নির্দেশনাও দেয়া হয়। নগর বিএনপিতে ত্যাগী ও যোগ্যদের মুল্যায়ন করায় জাতীয়তাবাদী দলের মহানগর শাখা যেন নব-উদ্যোগে প্রাণ-সঞ্চারিত হয়। সেই সাথে উজ্জীবন হয় কর্মীরাও। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ধীরে ধীরে ফিরে আসে দলের চাঙ্গাভাব। এ সক্রিয়তার পিছনে রয়েছে দুঃসময়ে কারাবরণ, জীবন ঝুঁকি নিয়ে রাজপথে কর্মসুচী বাস্তবায়নকারী , নানাধরণের হয়রানী ও নিষ্পেষিত নেতাদের অবদান। এর মধ্যে অন্যতম অবস্থানে জিয়াউদ্দিন সিকদার। তিনি নগর বিএনপি’র সদস্য সচিব। দু’ধাপে গঠিত আহবায়ক কমিটিতেই সদস্য সচিব পদে বহাল রাখা হয় জিয়াউদ্দিনকে। মুলত সাংগঠনিক দুরদর্শীতা, সাহসীকতা ও আওয়ামী সরকারের সময়ে দীর্ঘ ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে হামলা ও হয়রানীমুলক একাধিক মিথ্যা মামলায় কারাবরণ করে নিষ্পেষিত হয়েছেন তিনি। এসবের মধ্যে থেকেও ঝুকিপুর্ণ রাজনীতি জেনেও মাঠ ছাড়েননি জিয়া। স্বৈরাচারি আওয়ামী সরকার হটাতে দলের নানাবিধ কঠোর কর্মসুচী বিফল হলেও বিমুখ হননি জিয়াউদ্দিন। আশার আলো নিভু নিভু জেনে অনেক নেতাকর্মী রাজনীতির মাঠ থেকে আত্নকেন্দ্রীক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে ফিরলেও দলের প্রতি গভীর ভালবাসা ও আস্থা থেকে বিচলিত হননি নগর বিএনপি’র এ ত্যাগী নেতা । ভয়কে সাহসে পরিণত করে নতুন সুর্য উদয়ের অপেক্ষায় নিজের বুদ্ধিমত্তা ও নৈতিকতার পরিচয় দিয়ে ক্রান্তিলগ্নে টিকিয়ে রেখেছেন বিএনপি’কে।
গত বছরের মাঝামাঝি দিকে দলের গভীর ক্রান্তিলগ্নে যখন একাধিক নেতাকর্মী নানাধরণের হয়রানীর শিকার হয়ে হাল ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি থেকে গুটিয়ে পড়েছিলেন ঠিক তখনই আরও সক্রিয়তার পরিচয় দেন জিয়াউদ্দিন সিকদার।
লড়ে যান স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগের সব অন্যায়ের বিরুদ্ধে। সাধারণ মানুষের দাবি আদায় ও দেশে গণতান্ত্রিক সুষ্ঠু পরিবেশ ফেরাতে কেন্দ্র ঘোষিত দিক-নির্দেশনার অংশ হিসেবে মাঠপর্যায়ের অগ্রভাগে নেতৃত্ব দেন তিনি। জীবন ঝুকি, মামলা ও কারাবরণের ভয়কে ছুতে পারেনি তাকে। দলের জন্য প্রাণ দিতেও প্রস্তত রয়েছেন এ নেতা । যার প্রমাণ দিয়েছেন চলতি বছরের আগস্ট মাসের প্রথম দিকে বরিশাল নগরীর চৌমাথা এলাকায় স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগের হামলায়। স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগ হটাতে যখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ উত্তপ্ত ছিল। এ মুহুর্তে ছাত্র আন্দোলন প্রতিহতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে আওয়ামী লীগ। আর আন্দোলন সফলে প্রাণপন সহযোগীতা করে বিএনপি।
ঐ সময়ে চৌমাথা এলাকায় নগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ নেতৃত্বে বিএনপি’র ওপর হামলা ও রক্তপাতের নৃশংস ঘটনার স্বাক্ষী হয় পুরো বরিশালবাসী। সংঘাতে গুরুত্বর আহত হন নগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়া। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ছোড়া গুলি ও অস্ত্রের আঘাতে জিয়া সিকদারের শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষত-বিক্ষত হয়।
আহতের অবস্থা এতটাই গুরুত্বর ছিল অনেকের ধারণা ছিল প্রাণহানীর। কিন্ত দীর্ঘ চিকিৎসায় বেঁচে ফিরলেও উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই দায়ের হয় মিথ্যা মামলা । আর এতে গুরুত্বর অসুস্থবস্থায় গ্রেফতার করা হয় জিয়াউদ্দিনকে। পরবর্তীতে স্বৈরাচারি সরকার বিদায়ে কারামুক্ত হন তিনি।
দুরদর্শীতা ও আত্নত্যাগ আর সাংগঠনিক সক্রিতায় কেন্দ্রের যথার্থ মুল্যায়ন পেয়েছেন তিনি। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা কাটালেও কাটেনি অপশক্তি আর পতিত সরকারের দোসরদের অপতৎপরতা। নগর বিএনপি’র সাহসী এ নেতাকে পদচ্যুত ও হেয় প্রতিপন্নে ঐ মহলের অসাধু পাঁয়তারা যেন আওয়ামী লীগের ইন্ধনেই চলছে বলে অভিযোগ করে জানিয়েছেন অন্যসব নেতাকর্মীরা। দলের সুখ্যাতি ক্ষুন্নে এ নেতার বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র এঁটে চলেছে ঐ মহল। নিজের নীতি ও নৈতিকতায় বারংবার সেটি নস্যাৎ হলেও থামছেনা অসাধুরা।
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ এনে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য অনলাইন গণমাধ্যমে উপস্থাপিত হয় বলে জানান নগর বিএনপি’র কর্মীরা। তারা জানান, জিয়াউদ্দিন সিকদার একজন কর্মীবান্ধব ও জনকল্যাণমুখী নেতৃত্ব। তিনি সদস্য সচিবের পদে আসীনের পর থেকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজমুক্ত করণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। কতিপয় অসাধুরা এতে বাধ সাধছেন। যার ধরূন চাঁদাবাজি বন্ধ করায় অনেকে ফায়দা লুটতে ব্যর্থ হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন মাধ্যমে ক্লীন ইমেজের নেতার বিরুদ্ধে অপ-প্রচার চালানো হচ্ছে।
সম্প্রতি জিয়ার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে তথ্য উপস্থাপন করে সংবাদ প্রকাশিত হয় সেখানে বিষয়টিকে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর দাবি করে মন্তব্য করেছেনে একাধিক কর্মী ও সাধারণ মানুষ।
নাঈম হাসান নিপু নামের একজন মন্তব্যে অপ-প্রচার উল্লেখ করে জানান, “আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দোসরদের মূর্তিমান আতংক বিএনপি সদস্য সচিব জিয়া”
সম্পূর্ণ নিউজটি পড়লাম। কিন্তু তথ্যগুলো এত বেশী বিভ্রান্তিকর যে ষড়যন্ত্রগুলি স্পষ্ট বোঝা যায়। বারবার অভিযোগের তীর মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব জনাব জিয়াউদ্দিন সিকদার জিয়া’র দিকে ওঠায় একটা ব্যাপারে নিশ্চিত যে বরিশালে ফ্যাসিবাদের দোসরদের একমাত্র মাথাব্যাথা তিনিই।
সব জায়গায় ফ্যাসিবাদের পূনর্বাসনের ক্ষেত্রে বরিশালে একমাত্র বাধাও জনাব জিয়াউদ্দিন শিকদার জিয়া। এভাবে ষড়যন্ত্র করে কি লাভ? আওয়ামী আসবে না, আর আপনাদের খায়েশও পূর্ণ হবে না ইনশাআল্লাহ।
অপ-প্রচারের নিন্দা জানিয়ে বাবর খালেদ নামের এক ব্যক্তি মন্তব্যে জানান, জিয়াউদ্দীন সিকদারের রক্তে রঞ্জিত বরিশালের রাজপথ।দলের জন্য জীবন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে গেছেন দলের দূ:সময়ে। অথচ একটা মহল পরিকল্পিতভাবে দল ও জিয়াউদ্দীন সিকদার ভাই কে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য মিডিয়া কে ব্যবহার করে আওয়ামী দোসরা নানা রকমের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন সংবাদ প্রচার করতেছে।আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।
এদিকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশ থেকে পিছু হটছেন না এ নেতা। তার দেয়া নির্দেশনা ও আদর্শকে ধারণ করে সমাদৃত করছেন নগর বিএনপিকে। ঐক্যবদ্ধতার বন্ধনে আবদ্ধ রাখার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তিনি। লড়াই নয় এখন লক্ষ্য গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা। আর তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐ সরকার প্রতিষ্ঠায় গণ-মানুষের অধিকার ফেরাতে প্রাণপন কাজ করে যাচ্ছেন জিয়াউদ্দিন সিকদার। এমন দাবি জানিয়ে অসাধু মহলকে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন অন্যান্য নেতাকর্মীরা।
এদিকে দায়িত্বপ্রাপ্তি আর স্বৈরাচারি সরকার পতনের পর দীর্ঘ জিম্মি দশা কাটাতেও ভুমিকা রেখেছেন জিয়াউদ্দিন সিকদার। কেন্দ্র ঘোষিত ও তারেক রহমানের আদর্শকে ধারণ করে সর্বত্র স্বচ্ছ্বতা ফেরাতে নিজের সাংগঠনিক দুরদর্শীতার পরিচয় দিয়েছেন। চাঁদামুক্ত ঘোষণা করেছেন নগরীর অন্যতম প্রাণকেন্দ্র রুপাতলী এলাকাকে। এছাড়া কোন স্থাপনা থেকে চাঁদা আদায়ও বন্ধ করেছেন তিনি। বিএনপির ভাবমুর্তি অক্ষুন্ন রাখতে কোন কর্মী যাতে অসাধু কোন কর্মকান্ডে লিপ্ত না হয় সেজন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন তিনি। সাধারণ মানুষের মধ্য আস্থা ফেরাতে সাংগঠনিক দক্ষতাকে বারংবারের ন্যায় কাজে লাগাচ্ছেন জিয়াউদ্দিন। মোটকথা লক্ষ্য বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামীর বাংলাদেশ হবে গণতন্ত্রের দেশ। আর সে লক্ষ্যকেই জানান দিয়ে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করে যাচ্ছেন তিনি।
জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, বিগত স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপি’র সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে। তারা এখনও গুপ্ত অবস্থায় লুকিয়ে দেশের অর্জনকে ম্লানে নানান অপতৎপরতা চালাচ্ছে। যার ধরুন এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বাস্তবিক অর্থে ঐসব অভিযোগের কোন সত্যতা নেই। বর্তমানে সন্ত্রাস মুক্ত হয়েছে দেশ। কোন চাঁদাবাজি নেই। আমরা একটা গণতান্ত্রিক দেশ গঠন করতে চাই। জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে সেটি বাস্তবায়নে কর্মী হিসেবে মাঠে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা জনগণের কাধে কাধ মিলিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে চাই। আশা করি, আমাদের নেতা গণতন্ত্রের অতন্ত্র প্রহরী জনাব তারেক রহমানের নেতৃত্বে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা হবে। সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কোন সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দিব না। সন্ত্রাসীর কোন আশ্রয়স্থল বরিশালে হবে না, হবে না।
বরিশাল নগর বিএনপির আহবায়ক মো: মনিরুজ্জামান খান ফারুক জানান, যেকোন অভিযোগের সুনির্দিষ্ট তথ্য, প্রমান ও স্বাক্ষী থাকতে হবে। এসব থাকলে আমরা কেন্দ্রে পাঠাবো। আর এগুলো না থাকলে বিভ্রান্তিকর। বার বার কেন এসব অভিযোগ? জানতে চাইলে তিনি আরও জানান, বিষয়টি অপ-প্রচার ও ষড়যন্ত্রের অংশও হতে পারে।
Leave a Reply