অনলাইন ডেস্ক
বরিশাল বিএনপি রাজনীতির লড়াই সংগ্রামের লড়াকু যোদ্ধা ও রাজপথের আপোষহীন নেতা জিয়াউদ্দিন সিকদারের জনপ্রিয়তার ইমেজকে সংকটে ফেলতে নানা কায়দায় অসত্য অভিযোগ তুলে ধরে মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন দলের তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা।
কর্মীরা বলছেন, দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভুত্থানে স্বৈরাচারের পতন হওয়ার পর অর্থনৈতিকভাবে ফাঁয়দা লুটতে ব্যর্থ হওয়া একটি চক্র দলের ত্যাগী ও নিবেদিতপ্রাণ নগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদারের বিরুদ্ধে তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে মিথ্যাচার চালিয়ে আসছে। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন স্বৈরাচার পতন আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন করা কর্মীরা।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই নেতার সঙ্গে বসে কথা বলা অবস্থার একটি ছবি বিভিন্ন প্লাটফর্মে ছড়িয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে এ প্রতিবেদককে প্রশ্ন রেখে বরিশাল নগর বিএনপির সদস্য সচিব জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর থাকাকালীন সময়ে সামাজিক এক অনুষ্ঠানে গেলে সেখানের কুশলাদি বিনিময়ের ছবি ছড়িয়ে দিয়ে একটি চক্র কী বোঝাতে চাইছে? এটা আমার বোধগম্য নয়।স্বৈরাচারের দোসরদের সঙ্গে কোন আপোষকামিতা নয়। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঘিরে গত ১৯ জুলাই দুপুরে বরিশাল নগরীর সিঅ্যান্ডবি রোডে বিএনপির সমাবেশে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিও করা হয়েছে স্থানীয় ওই আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমান জাকির ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান মাসুমকে। এরমধ্যে জাকির ৮১ নম্বর আসামি এবং মাসুম ৪৩ নম্বর আসামি।
বিএনপি নেতা জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, ঈদের সময়ে কিংবা কোন সামাজিক অনুষ্ঠানে ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে এরকম সামাজিক সম্প্রতির বিষয়ে কুশলাদি বিনিময়ের চর্চা বাংলাদেশে অনেক আগ থেকেই চলে আসছে। সামাজিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য নির্ভর করে মানুষের চারিত্রিক শুদ্ধতার ওপর। মনন জগৎ পরিশুদ্ধ হলে সমাজ হয় হানাহানি ও অনাচারমুক্ত। সামাজিক সম্প্রীতির বিষয়টি রাজনৈতিক অঙ্গন থেকে সমাজের সকল অঙ্গনেই চর্চা হয়ে আসছে। রাজনৈতিক শীর্ষ পর্যায়েও সামাজিক সম্প্রীতি বিরাজমান। এটা নিয়ে বিতর্কের কোন সুয়োগ নেই। তিনি বলেন, তথ্য সন্ত্রাসের মাধ্যমে বিভিন্ন পন্থায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার চালানো হচ্ছে, যা অত্যন্ত ঘৃণ্য ও ষড়যন্ত্রমূলক।
আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত প্রসঙ্গে বলেন, রাজপথে যাদের নিয়ে আমি আন্দোলন সংগ্রাম করেছি, তাদের নিয়েই আছি। নগর বিএনপির শীর্ষ এই নেতা বলেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনার শাসনামলে যারা সুবিধা ভোগ করেছে, তাদেরকে আশ্রয় প্রশ্রয় দেয়ার প্রশ্নই আসে না। তিনি বলেন, স্বৈরাচারের দোসরদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই।
যারা এসব প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, তারা বিগত সময়ে দলের আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে ছিল না। ইশ্বানিত হয়ে কিংবা দল থেকে অবৈধ সুবিধা না পেয়ে আমার তীল তীল করে গড়ে তোলা রাজনৈতিক ইমেজ নস্যাৎ করতে বিভিন্ন কায়দায় অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে তারা। বিএনপি নেতা জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে অংশগ্রহন করেছি। বিগত আওয়ামী শাসনামলে রাজপথে জীবনবাজি রেখে লড়াই সংগ্রামের বিষয়টি গণমাধ্যম থেকে শুরু করে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ অবহিত।
বিএনপির ত্যাগী নেতা জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা, আধুনিক বাংলাদেশের রুপকার, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান (বীর উত্তম) জাতীয়তাবাদী চেতনার শক্তি দিয়ে লাইনচ্যুত রাষ্ট্রকে পুনরায় সঠিক পথে পরিচালনা করতে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রতিষ্ঠা করেন। এবং তার ভিত্তিতে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন।
আধুনিক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভীত তার সময়কালেই স্থাপিত হয়। বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী চেতনার ধারক, বাহক ও প্রতিনিধিত্বকারী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। বিএনপি জাতীয়তাবাদের চেতনায় বিগত সময়ের মতো আজও রাজপথে সক্রিয় আছে জাতির অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে। তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে স্বৈরাচার পতন আন্দোলন করতে গিয়ে জেলজুলুম, দমন, নিপীড়ন, নির্যাতনের শিকার হয়েছি। কিন্তু কোন কিছুতেই আমাকে দলের চেইন অব কমাণ্ড এবং দলের আদর্শ, উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য থেকে বিচ্যুতি করতে পারেনি। স্বৈরাচার পতন আন্দোলন করতে গিয়ে বার বার আমি মৃত্যুর দরজা কাছ থেকে দেখেছি। জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে বরিশালের রাজপথে সক্রিয় থেকে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আন্দোলন করেছি। রাজপথের আন্দোলনে স্বৈরাচারের দোসররা আমাকে হত্যাচেষ্টায় কুপিয়ে জখম করে মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে চলে যায়। আমি মারা গেছি, এটা সর্বত্র ছড়িয়েও পড়ে। সেই মৃত্যুর দরজা থেকে সৃষ্টিকর্তার অশেষ কৃপায় বেঁচে আছি।
দলের জন্য এতো ত্যাগ, দেশ, মাটি ও মানুষের অধিকার আদায়ের আন্দোলন সংগ্রামের পর এখন যারা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে, তারা মূলত: দলের দুর্দিনে রাজপথে ছিলো না। দলের কোন কর্মসূচীতে এই অপপ্রচারকারীদের অংশগ্রহন ছিল না।এরা সুযোগ-সন্ধানী, দলের অবৈধ সুবিধা না পেয়ে নানা কায়দায় অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। যা খুবই দু:খজনক। দলের সাংগঠনিক কোন কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত ছিল না, তারা মিথ্যাচার কিংবা অপপ্রচার চালিয়ে দল থেকে অবৈধ সুবিধা নেওয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে। আসলে এই অপপ্রচারকারীরা দলের কেউ নয়, দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থেকে দলের দুর্নাম করছে।
এসব অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বরিশাল বিএনপির রাজপথের অগ্রগামী যোদ্ধা জিয়াউদ্দিন সিকদার বলেন, আমার রাজনৈতিক ও সামাজিক সুনাম ক্ষুন্ন করতে যারা মিথ্যাচার চালিয়ে আসছে, তারা জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শ লালন ও ধারণ করে না। এসকল মিথ্যাচার চালানো অপপ্রচারকারীদের থেকে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার অনুরোধ জানান তিনি।
Leave a Reply