নিজস্ব প্রতিবেদক
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে এক ইউনিয়নে সংঘাতের মূল ঘটনার প্রকাশ্যে এসেছে। গত ৮ মে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে উপজেলার পাদ্রিশিবপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, পাদ্রিশিবপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের একটি স্কুলের ভোটকেন্দ্রকে ইস্যু করে দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটে।
এর মধ্যে একপক্ষ উপজেলা নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী আনারস প্রতীকের বিশ্বাস মুতিউর রহমান বাদশার অনুসারি। অপরপক্ষ বিজয়ী কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী রাজিব আহম্মদ তালুকদারের অনুসারী। আনারস প্রতীকের অনুসারী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম বাবু জানান, সদ্য সমাপ্ত উপজেলা নির্বাচনে বিজয় লাভ করেন কাপ-পিরিচ প্রতীকের প্রার্থী রাজিব আহম্মদ তালুকদার। ভোটের দিন সন্ধ্যায় ফলাফল ঘোষণার পরপরই রাজিব তালুকদারের অনুসারি ইউনিয়নের নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা জহিরুল ইসলাম সেন্টুর নেতৃত্বে প্রায় ২০/২৫ জন মিলে আনারস প্রতীকের অনুসারি শহীদ মল্লিককে ইউনিয়নের ঝাউতলার মল্লিক মার্কেটের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আনারস প্রতীকের আরেক অনুসারি বশির জোমাদ্দার প্রতিবাদ করলে তাকেও মারধর করে একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করে ।
।এতে শহীদের মাথা ফেটে গুরুত্বর আহত হয়। এসময় আরেক অনুসারি রাসেল মল্লিককেও মারধর করে ফেলে রেখে যান তারা। যার ভিডিও ফুটেজ সংরক্ষিত রয়েছে। এসময় দু’পক্ষের অনুসারিদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনাও ঘটে। চেয়ারম্যান বাবু বলেন, ফলাফল পাওয়ার পর-পরই আমি ও আমার ছোট ভাই সজিব বাসায় ফিরে যাই। ঘটনা শুনে তাৎক্ষনিক আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। উভয়পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি। তিনি আরও বলেন, সংঘাতে না গিয়ে উল্টো উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসি। অথচ সংঘাতের বিষয়ে আমাকে ও আমার ছোট ভাই সজিবকে জড়িয়ে ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে রাজিব তালুকদারের সমর্থকরা । আমরা এঘটনায় জড়িত নই। আমাদের বিরুদ্বে থানায় মিথ্যা অভিযোগ দিয়েও হয়রানী করা হচ্ছে।
বাবু বলেন, শুধু সন্ধ্যায়ই তারা সংঘাতে জড়াননি। ভোটগ্রহণের আগেরদিন রাতেও রাজিব তালুকদারের সমর্থক জহিরুল ইসলাম সেন্টু ও মাসুদ আকনের নেতৃত্বে আনারস প্রতিক-উড়োজাহাজ প্রতীকের প্রার্থীর বুথ ভেঙ্গে দেয়। পোস্টার ছিড়ে ফেলে অশ্লীল গালিগালাজ করে।
চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় থাকবেই। মানুষ চাচ্ছে উন্নয়ন। সেক্ষেত্রে বিজয়ী প্রার্থী উন্নয়ন করবে এই প্রত্যাশা রেখে তার পাশে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। সহিংসতা বাদ দিয়ে সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে উন্নয়ন কার্যে সহায়তায় ইউনিয়নবাসীর প্রতি আহবান জানান তিনি। এক্ষেত্রে উভয়পক্ষকে সহাবস্থানের আবেদন জানান চেয়ারম্যান বাবু।
এদিকে ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার রাত ৮ টায় নিজ বাসভবনে অপ-প্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন চেয়ারম্যান বাবু। তিনি সেখানে বলেন, ইউনিয়নের কতিপয় ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও অবাস্তব অভিযোগ এনে মানহানিকর অবস্থা সৃষ্টি করে অপ-প্রচার চালাচ্ছে। এঘটনায় নির্বাচন ইস্যুতে প্রতিপক্ষরা জড়িত রয়েছে । আমার ভাবমূর্তি বিনষ্টে অপতৎপরতা চালাচ্ছেন তারা । তিনি আরও বলেন, আমার কোন সাক্ষাৎকার না নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভিত্তিহীন বক্তব্য প্রকাশ করেছেন।
মূলত বিষয়টি হলো ৮ মে নির্বাচনী কার্যক্রম শেষে পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের ঝাউতলা নামক স্থানে আসলে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে রাজিব তালুকদারের কাপ পিরিচের সমর্থক জহিরুল ইসলাম সেন্টুর নেতৃত্বে তার বাহীনি দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে আনারস মার্কার প্রার্থীর কর্মী শহীদ মল্লিক ও বশির জোমাদ্দারের ওপর উপর অতর্কিত হামলা চালায়। ঘটনা ভিন্নখাতে নিতে আমি ও আমার ছোট ভাই সজিবকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা ও হামলাসহ বিভিন্ন হুমকি-ধমকি দিচ্ছে।
এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, উভয়পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছে। যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply