নিজস্ব প্রতিবেদক // বরিশালের শের-ই-বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে রোগ নির্ণয়ের অধিকাংশ যন্ত্র বিকল বছরের পর বছর। দামি অনেক যন্ত্র চালুর কিছুদিন পরই আবার বিকল হয়ে যায়। মেয়াদোত্তীর্ণ কিছু যন্ত্র জোড়াতালি দিয়ে কোনো রকমে চালু রাখা হয়েছে।ফলে হাসপাতালে ভর্তি থাকা এবং বহির্বিভাগে আসা রোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যেতে হয় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
এতে চিকিৎসায় ব্যয় হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা, সেই সঙ্গে রোগীদের পোহাতে হয় সীমাহীন দুর্ভোগ। সূত্র জানায়, হাসপাতালের দুটি সিটিস্ক্যান যন্ত্র একসঙ্গে অচল হয় ২০২০ সালে। এর পর থেকে টানা আড়াই বছর সিটিস্ক্যান বন্ধ ছিল। ২০০৭ সালে বসানো যন্ত্রটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
অপরটি চালু হয়েছে সম্প্রতি। হাসপাতালের পাঁচটি আলট্রাসনোগ্রাম যন্ত্রের মধ্যে তিনটি অচল প্রায় দু-তিন বছর। দুটি যন্ত্র দিয়ে আন্তঃ ও বহির্বিভাগের রোগীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্ভব হয় না বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা এক্স-রে বিভাগের। ১৩টি এক্স-রে যন্ত্রের মধ্যে বিকল আটটি। বাকি পাঁচটি চালু আছে। এক্স-রে বিভাগের টেকনিশিয়ান বাবুল আক্তার জানান, বিকল আটটির মধ্যে পাঁচটি এক্স-রে মেশিন একেবারেই নষ্ট।
বাকি তিনটি মেরামত করলে চালানো যেতে পারে। একটি মাত্র এমআরআই যন্ত্র ছয় বছর ধরে বিকল। মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় মেশিনটি আর সচল করা সম্ভব না।
নতুন একটি এমআরআই যন্ত্রের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বেশ কয়েকবার চিঠি দিয়েও লাভ হয়নি। এদিকে হাসপাতালের ইকোকার্ডিওগ্রাম যন্ত্র অচল থাকায় হৃদরোগে আক্রান্তরা যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না। ২০২১ সালের মাঝামাঝি থেকে এই সেবা বন্ধ।
ক্যাথল্যাব স্থাপন করা হয় ২০১৪ সালের জুনে। তবে এটি বন্ধ থাকায় মাঝে টানা তিন বছর এনজিওগ্রামও বন্ধ ছিল। সেটি পরিচালনাকারী টেকনিশিয়ান গোলাম মোস্তফা জানান, মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্রটি বারবার মেরামত করে সচল রাখতে হচ্ছে।
সম্প্রতি সেটি আবার সচল করা হয়েছে। ক্যান্সারে আক্রান্তদের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কোবাল্ট-৬০ মেশিনও অচল। শেবাচিমের চিকিৎসা সরঞ্জাম তদারক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন সময়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এসব যন্ত্র কেনা হয়েছিল।
যেগুলোর গ্যারান্টি মেয়াদ রয়েছে, সেগুলো মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। শেবাচিম হাসপাতালের পরিচালক এইচ এম সাইফুল ইসলাম বলেন, রোগ নির্ণয়ের যন্ত্রগুলোর বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply