নিজস্ব প্রতিবেদক // আর কয়েক দিন পরই কুরবানির ঈদ। কুরবানিকে সামনে রেখে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে কালা মানিক ও কালা চাঁদ।হলস্টেন ফ্রিজিয়ান জাতের এ ষাঁড় দুটিকে দেখার জন্য প্রতিদিন উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন এদের মালিক আবদুল কাদের রাসেলের বাড়িতে।
উপজেলার ৬ নং লামচর ইউনিয়ন পরিষদের দক্ষিণ মজুপুর ইলিয়াস কবিরাজ বাড়ির মো. ইলিয়াস কবিরাজের ছেলে আবদুল কাদের রাসেল আড়াই বছর ধরে এ গরু দুটি দেখাশোনা ও লালনপালন করে আসছেন। রাসেল জানান, বাবার অনুপ্রেরণায় শখের বসেই এ গরু দুটিকে দীর্ঘসময় ধরে লালনপালন করে আসছেন তিনি।
তবে এবার কুরবানির ঈদ উপলক্ষে শখের গরু দুটিকে বিক্রি করতে চান তিনি। একই সঙ্গে গরু বিক্রয় করে যে টাকা আসবে তা দিয়ে বাবা-মাকে নিয়ে ওমরাহ হজে যাওয়ার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছেন রাসেল।
তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলস্টেন ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড় দুটি তাদের নিজ খামারের গাভির দেওয়া বাচ্চা। কালো হওয়ায় জন্মের পরপরই একটির নাম রাখা হয় কালা মানিক। আর অন্যটি কালো এবং গায়ে সাদা ডোরা কাটা বেশি হওয়ায় তার নাম রাখা হয় কালা চাঁদ।
ষাঁড় দুটিকে পরম যত্নেই লালনপালন করেন মো. রাসেল ও তার সহযোগী নুর হোসেন। ষাঁড় দুটির প্রধান খাদ্য- গম, ভুসি ও কাঁচা ঘাস। শখ করে প্রতিদিন কলাও খাওয়ানো হয় ষাঁড় দুটিকে। আর এসব খাবারের পেছনে প্রতিদিন রাসেলের ব্যয় হয় প্রায় ১৭০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতিদিন দুই থেকে তিনবার করানো হয় গোসল। আড়াই বছরের পরিচর্যায় এরই মধ্যে ২০ মণ ছাড়িয়ে গেছে ষাঁড় দুটির ওজন।
এবারের কুরবানিতে দুটি গরুই ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে বিক্রির ইচ্ছা রাসেলের। তবে আলোচনা সাপেক্ষে পছন্দ হলে একটু কমে হলেও বিক্রি করতে পারেন বলে জানিয়েছেন গরু দুটির মালিক। প্রতিবেশীদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, ইলিয়াস কবিরাজ যেমন একজন গরুপ্রেমী মানুষ, তেমনি তার ছেলে রাসেলও ঠিক বাবার মতো গরুপ্রেমী। শখের বসেই কালা চাঁন আর কালা মানিককে আড়াই বছর ধরে পরম যত্নে লালনপালন করছেন তারা।
কালা মানিক ও কালা চাঁদের পরিচর্যাকারী নুর হোসেন বলেন, ‘৩০ মাসেরও বেশি সময় ধরে এ গরু দুইটি দেখাশোনা ও লালনপালন করে আসছি। এদের যত্নতে কোনোরকম অবহেলা সহ্য করেন না রাসেল। কালা চাঁদ আর কালা মানিকের খাবার, থাকার ঘর ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সবসময় সচেতন থাকতে হয় আমাদের।’
গরুর মালিক মো. আবদুল কাদের রাসেল বলেন, বাবার অনুপ্রেরণায় শখের বসেই নুর হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে কালা মানিক আর কালা চাঁদকে দেখাশোনা এবং লালনপালন করে আসছি আমরা। গরু দুটি এবার বিক্রি করতে পারলে বিক্রির টাকা দিয়ে বাবা-মাকে নিয়ে ওমরাহ হজে যাওয়ার ইচ্ছাও আছে।
ষাঁড় দুটির ব্যাপারে কথা হয় রামগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রাকিবুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, ফ্রিজিয়ান জাতের গরুগুলো আকারে অনেক বড় হয়ে থাকে। রাসেলের গরু দুটির বিষয়ে আমরা খোঁজখবর নিয়েছি।
প্রাকৃতিক উপায়েই এদের মোটাতাজা করা হয়েছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে এখানকার খামারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে। ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করে বেশ লাভবান হচ্ছেন আমাদের খামারিরা।
Leave a Reply