একই ওয়ার্ডে এক সপ্তাহ ধরে ভর্তি আছেন বাকেরগঞ্জের মিন্টু খান (৬০)। পাশে হাতপাখা নিয়ে বাতাস করছিলেন রোগীর পুত্রবধূ। তিনি বলেন, ‘ফ্যানের যে বাতাস, হ্যা গায় লাগে না। দ্যাহেন না ঘোরে কত আস্তে আস্তে। হেইতে বাইরে গোনে পাহা (পাখা) কিন্না আনছি।’
শুধু এই ওয়ার্ডেই নয়, মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডসহ অনান্য ওয়ার্ডগুলোর একই অবস্থা। তবে অভিযোগ রয়েছে, ওয়াডের্র সচল এসিগুলো চিসিৎসকদের কক্ষে ব্যবহার হচ্ছে। কয়েকজন রোগী ও স্বজনেরা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, সাত-আট মাস ধরে এসিগুলো খারাপ। গরমের ভিতরে রোগী নিয়ে আমাদের থাকতে হচ্ছে। এত বড় সরকারি হাসপাতালে এমন পরিস্থিতি দেখার কেউ নেই।
ওয়ার্ডের কয়েকজন স্টাফনার্সের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শয্যা সংখ্যা কম হওয়ায় প্রতিদিন দ্বিগুণ-তিনগুণ রোগী এখানে ভর্তি হন। ফলে মেঝেতেও রোগীদের শয্যা দিতে হয়। আগে এসি সচল ছিল। এখন বিকল হয়ে পড়ায় রোগীদের দুর্ভোগ হয় ব্যাপক। তাঁরা নিজেরাও কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। একজন রেজিস্ট্রার এবং তিনজন চিকিৎসা কর্মকর্তা দিয়ে পালাক্রমে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা বলেন, হাসপাতালের মূল ভবনের ভেতরে বিভাগটি এমনভাবে নির্মিত, যেখানে দক্ষিণ ও পশ্চিম দিক থেকে বাতাস চলাচল করতে পারে না। ভবন নির্মাণে কৌশলগত ত্রুটির কারণেও ভেতরটা গরম হয়ে থাকে। ভেতরে এসি না চালিয়ে রাখলে পরিস্থিতি খারাপ হয়ে যায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, চার বছর আগে নির্মিত ৫ তলা ভবনটিতে ২০২০ সালের মার্চে করোনা ইউনিট চালু করা হয়। সেসময় এসিগুলো সচল থাকলেও ব্যবহার করা হয়নি। পরে ভবনটি গত ডিসেম্বরের শেষভাগে মেডিসিন ওয়ার্ডের ৪টি ইউনিট স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু এরপর থেকেই এসির সুবিধা পাননি রোগী ও স্টাফ নার্সরা।
বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) মনিরুজ্জামান শাহিন বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলো কেন বন্ধ রয়েছে, তা গৃহায়ণ ও গণপূর্ত বিভাগ ভালো বলতে পারবেন। কারণ এসব বিষয় সমাধান চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা তেমন সাড়া পাচ্ছি না।’
এ বিষয়ে গণপূর্ত বিভাগের মেডিকেল উপবিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী ফিরোজ বলেন, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রগুলো ব্যবহার না করায় কার্যক্ষমতা হারিয়েছে। বরাদ্দের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র সচল করা সম্ভব হবে।’
Leave a Reply