প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাতার সফর নিয়ে আজ সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কোনো তথ্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে নেই। মার্কিন প্রশাসন এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আগে কাউকে কিছু জানায় না। ওই প্রতিবেদনের অনেক তথ্য ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
বাংলাদেশের ওপর ফের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা হবে কি না, সে বিষয়ে আমার কোনো ধারণা নেই। আমরা জানি না। ওরা (যুক্তরাষ্ট্র) বলে-কয়ে তো কোনো দিন কিছু করে না। তবে আমাদের কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, “দেশে স্যাংশনের কোনো কারণই নেই।” এটা যদি হয়, তাহলে খুব দুঃখজনক হবে।’
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ওই দৈনিক পত্রিকা মিথ্যা তথ্য দিয়েছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবেদনে যে তথ্য দিয়েছে, সেটা মিথ্যা তথ্য। সেখানে বলেছে- আমি মন্ত্রী হওয়ার আগে চায়নিজ প্রতিষ্ঠানে লবিস্ট হিসেবে কাজ করেছি, এটা ডাহা মিথ্যা। বরং বলতে পারেন আমি সারা জীবন যুক্তরাষ্ট্রে ছিলাম, সেখানে কাজ করেছি।’
বাংলাদেশের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের শুভবুদ্ধির উদয় হবে আশা রেখে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমেরিকা তো প্রায়ই হাজার হাজার স্যাংশন দিয়েই যাচ্ছে। উই হোপ, আমেরিকার শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তারা এসব করবে না।’
এর আগে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নিপীড়নের কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র্যাবের সাতজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, বাংলাদেশের আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সতকর্তা জারি করেছে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস। ঢাকাসহ সারা দেশে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের সতর্কতার সঙ্গে চলাফেরার পরামর্শ দিয়েছে তারা। গতকাল রোববার বিকেলে মার্কিন দূতাবাস ‘ডেমোনস্ট্রেশন অ্যালার্ট’ শিরোনামে হালনাগাদ ভ্রমণ সতর্কবার্তায় এ পরামর্শ দিয়েছে।
সতর্কবার্তায় বলা হয়, মার্কিন নাগরিকদের জন্য জারি করা ওই সতর্কবার্তা ঢাকা এবং বাংলাদেশের অন্য শহরগুলোর জন্যও প্রযোজ্য হবে। এতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন ২০২৪ সালের জানুয়ারির আগে বা ওই সময়ে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ওই নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলের সমাবেশ এবং অন্যান্য নির্বাচনী কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। সাধারণ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সমাবেশ এবং বিক্ষোভের সংখ্যা ক্রমবর্ধমান হারে বাড়তে পারে এবং এগুলোর গতি তীব্রতর হতে পারে। সম্ভাব্য পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশে থাকা মার্কিন নাগরিকদের আগাম সতর্কতা মেনে চলা উচিত।
মার্কিন দূতাবাসের ওই বার্তায় বলা হয়, নাগরিকদের মনে রাখা উচিত, শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ যে কোনো সময় সংঘাতময় হয়ে উঠতে পারে, এগুলো মুহূর্তের মধ্যে সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন নাগরিকদের বড় সমাবেশ ও বিক্ষোভের স্থানগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। যে কোনো বড় সমাবেশের আশপাশে যাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। মার্কিন নাগরিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা পরিকল্পনা পর্যালোচনা করতে হবে। স্থানীয় ঘটনাসহ আশপাশের পরিবেশ পরিস্থিতির বিষয়ে সচেতন থেকে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন নজরে রাখতে হবে।
Leave a Reply