প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমধ্যসাগরে সর্বশেষ মারাত্মক নৌকাডুবির পরে উদ্ধার হওয়া ১৭ অভিবাসীকে সোমবার ইতালীয় কর্তৃপক্ষ উপকূলে নিয়ে এসেছে।
ইতালীয় সংবাদমাধ্যম এএনএসএ জানিয়েছে, উদ্ধার করা অভিবাসীদের ইতালির সিসিলি দ্বীপের পোজালো শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তারা সবাই মূলত বাংলাদেশের নাগরিক।
ইতালির কোস্টগার্ড জানিয়েছে, খারাপ আবহাওয়ার মধ্যে লিবিয়া থেকে বিপজ্জনক সমুদ্রযাত্রায় নামা অভিবাসীদের একটি নৌকা গত রোববার ভূমধ্যসাগরে ডুবে যায়। নৌকাডুবির ওই ঘটনায় ভূমধ্যসাগরে ৩০ অভিবাসী ডুবে গেছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে অবৈধপথে ইতালি যাওয়ার সময় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় ক্যালাব্রিয়ার কাছে জাহাজডুবির ঘটনায় অন্তত ৭৯ জন অভিবাসীর প্রাণহানি হয়। সেই ঘটনার দুই সপ্তাহের বেশি কিছু সময় পর আবারও অভিবাসীবাহী নৌ দুর্ঘটনার খবর সামনে এলো।
নৌকাটিতে ৪৭ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী ছিল জানিয়ে রোববার গভীর রাতে দেয়া এক বিবৃতিতে অ্যালার্ম ফোন অভিযোগ করে, ‘স্পষ্টতই ইতালীয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনা এড়াতে চেষ্টা করছিল। কারণ তারা উদ্ধারে গেলে বিপদাপন্ন এই অভিবাসীদের ইতালিতে আনতে হবে। আর এই কারণেই হস্তক্ষেপে বিলম্ব করে ইতালি চাইছিল যেন তথাকথিত লিবিয়ান কোস্টগার্ড সেখানে আসে এবং জোরপূর্বক লোকদের আবারও লিবিয়ায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়।’
অবশ্য ইতালির উপকূলরক্ষীরা বলেছে, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী নৌকাটি ডুবে যাওয়ার এই ঘটনাটি ইতালীয় অনুসন্ধান ও উদ্ধার এলাকার (এসএআর) বাইরে ঘটেছে। এমনকি ইতলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তাজানি বলেছেন, নৌকাডুবি এড়াতে রোম যথাসাধ্য চেষ্টা করেছে।
রয়টার্স বলছে, অভিবাসীদের বহনকারী ওই নৌকাটি ইতালির দিকে যাওয়ার সময় লিবিয়ার বেনগাজি বন্দর থেকে প্রায় ১১০ মাইল উত্তর-পশ্চিমে ডুবে যায় বলে মেডিটেরানিয়া সেভিং হিউম্যানস নামের একটি দাতব্য সংস্থা জানিয়েছে।
ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুসারে, ইতালিতে এ বছর সমুদ্রপথে অভিবাসীদের আগমন বেড়েছে। ইউরোপের এই দেশটিতে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় তিনগুণ বেশি অভিবাসী এসেছেন বলে রেকর্ড করা হয়েছে। শুধুমাত্র ৯-১১ মার্চ পর্যন্ত ৪৫০০ জনেরও বেশি মানুষ ইতালিতে পৌঁছেছেন।
উল্লেখ্য, সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টাকারী অভিবাসীদের জন্য ইতালি অন্যতম প্রধান এক প্রবেশপথ। কেন্দ্রীয় ভূমধ্যসাগরীয় এই রুটটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক হিসেবে পরিচিত।
আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রোজেক্টের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪ সাল থেকে মধ্য-ভূমধ্যসাগরে অন্তত ২০ হাজার ৩৩৩ জন অভিবাসনপ্রত্যাশী মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন।
Leave a Reply