শুক্রবার তারা জানায়, আগের রাতে একটি ছোট মাছ ধরার নৌকা তীরে তুলে আনার পর সেখান থেকে ৮ অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃতদেহ এবং ৪২ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
এই অভিবাসন প্রত্যাশীদের মধ্যে মালি, আইভরি কোস্ট, গিনি, ক্যামেরুন, বুরকিনা ফাসো ও নাইজারের নাগরিকরা রয়েছেন বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
উদ্ধার অভিযান শুরুর আগে ওই নৌকায় থাকা মৃত্যুপথযাত্রী মায়ের হাত গলে তার চার মাস বয়সী শিশু সমুদ্রে পড়ে যায়। আরেক ব্যক্তিও নৌকা থেকে উধাও হয়ে যান।
কয়েকদিন আগে তিউনিসিয়া থেকে নৌকটি যাত্রা শুরু করেছিল। যাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তারা সবাই হাইপোথারমিয়াতে (প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় শরীরের তাপমাত্রা কমে গিয়ে) মারা গেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার মাল্টার কর্তৃপক্ষ ইতালির কোস্টগার্ডকে অভিবাসন প্রত্যাশীবোঝাই ওই নৌকাটির কথা জানায়। ভূমধ্যসাগরের যেখানে নৌকাটি শনাক্ত হয়েছিল, সেটি মাল্টার নিয়ন্ত্রণাধীন।
অভিবাসন প্রত্যাশীবোঝাই নৌকা থেকে লোকজনকে উদ্ধার করতে লিবিয়া উপকূলের কাছে বিভিন্ন দাতব্য সংস্থার বিপুল সংখ্যক নৌযান থাকতো, কিন্তু ইতালির নতুন সরকারের একটি ডিক্রির কারণে এই সংখ্যা ও তাদের কার্যক্রম অনেকখানিই কমে এসেছে।
ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) টুইটারে লিখেছেন, এটি অগ্রহণযোগ্য যে মাল্টার অনুসন্ধান ও উদ্ধার অঞ্চলে ফের একটি নৌকায় প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, যখন এটি এড়ানো যেত। এই ধরনের বেদনাদায়ক ঘটনা বন্ধের এখনই সময়।
বিপুল সংখ্যক অভিবাসন প্রত্যাশীকে এ বছরও ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করতে দেখা যাচ্ছে। উদ্ধার জাহাজের অনুপস্থিতিতেই শুক্রবার ভোরের আলো ফোটার আগের রাতে ইতালির কর্তৃপক্ষকে ১৫৬ জনকে বহন করা আরও তিনটি নৌকাকে লাম্বেদুসা দ্বীপে নিয়ে যেতে হয়েছে।
লাম্পেদুসার মেয়র ফিলিপো মানিনো ফেইসবুকে লিখেছেন, উদ্ধার, তীব্র আলো, অ্যাম্বুলেন্স, বাসে লোকজনকে নিয়ে যাওয়া, লোকজনের চোখ ভয়ে স্ফীত, লোকজনকে বাঁচানোর আরেকটি রাত গেল। এভাবে কতদিন যাবে? এই দ্বীপকে আর কত মৃতদেহ গ্রহণ করতে হবে?
ইতালিতে যে অভিবাসন প্রত্যাশীরা ছুটছে, তাদের বেশিরভাগই উত্তর আফ্রিকার।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ৯৬৩ অভিবাসন প্রত্যাশী সমুদ্রপথে ইতালিতে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে, ২০২২ সালের একই সময়ে এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ৩৫, ২০২১ এ ছিল মাত্র এক হাজার ৩৯ জন, বলছে ইতালির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য।
২০২২ সালে নৌকায় করে সংখ্যা ছিল এক লাখ ৫ হাজার ১৪০ অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছেছিলেন, তার আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৬৭ হাজার ৪৭৭, ২০২০ এ ছিল ৩৪ হাজার ১৫৪।
জাতিসংঘের অনুমান, কেবল ২০২২ সালেই মধ্য ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করা প্রায় এক হাজার ৪০০ অভিবাসন প্রত্যাশীর মৃত্যু হয়েছে।
Leave a Reply