বিএনপির এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, সাত দলীয় জোট, জামায়াত ও এলডিপিসহ আরও কয়েকটি রাজনৈতিক দল। গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা ও রংপুর বাদে সারাদেশে গণমিছিলের মধ্যে দিয়ে মাঠে গড়ায় বিএনপির যুগপৎ আন্দোলন।
আগামী ৩০ ডিসেম্বর ঢাকায় গণমিছিল করবে আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী দলগুলো। যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচি হিসেবে এদিন ঢাকায় বড় আকারে শোডাউন করতে চায় বিএনপি। এ বিষয়ে নানাবিধ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি প্রায় প্রতিদিনই যৌথসভা, সমন্বয় সভা ও প্রস্তুতি সভা করছে। একইভাবে দলটির প্রতিটি অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরাও পৃথকভাবে প্রস্তুতি সভা শুরু করেছেন।
বিএনপির পাশাপাশি শরিক দলগুলোও তাদের সক্ষমতা দেখাতে চায়। গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোটও নানা উদ্যোগ নিয়েছে। নিজেদর মধ্যে একাধিকবার যৌথসভা করেছে। জোটগতভাবে প্রস্তুতির পাশাপাশি দলীয়ভাবেও নানান উদ্যোগ নিয়েছে। এদিকে রাজধানীতে সরকার বিরোধী গণমিছিল সফল করতে মাঠে থাকছে জামায়ত। ইতোমধ্যে নানা প্রস্তুতি শেষ করেছে বলে জানা গেছে।
সাত দল নিয়ে গঠিত গণতন্ত্র মঞ্চে। এ জোটের অন্যতম দল গণসংহিত আন্দোলন। দলটির প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল করবো। কর্মসূচি ঘোষণা আগেই করা হয়েছে। গণতন্ত্র মঞ্চের সাতটি দল এক সঙ্গে এই কর্মসূচি পালন করবে। মিছিল সামনে রেখে গণতন্ত্র মঞ্চ সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েছে। সেদিন আমরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে মিছিল শুরু করবো।
লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি-এলডিপির চেয়ারম্যান কর্নেল অলি আহমেদ বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের ১০০ ভাগ প্রস্তুতি শেষ করেছে এলডিপি। এলডিপির অফিসের সামনে থেকে বিকাল ৩টায় মিছিল শুরু হবে। মালিবাগ মোড়ে এসে মিছিল শেষ হবে। এই আওয়ামী লীগ সরকার সব দিক থেকে ব্যর্থ হয়েছে। আমাদের ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়, জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য শহরবাসীকে যার যার জায়গা থেকে এ গণমিছিল সফল করতে আহবান জানান তিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বাংলাদেশ জার্নালকে বলেন, আমাদের এই কর্মসূচি ছিলো ২৪ ডিসেম্বর। এদিন আওয়ামী লীগের সম্মেলন থাকার করণে আমাদের গণমিছিল না করার অনুরোধ করছিলো। এজন্য ঢাকায় গণমিছিলের তারিখ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর করা হয়েছে। গণমিছিল সফল করতে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সারাদেশে আমাদের বিভাগী গণসমাবেশ ও গণমিছিল সফল হয়েছে। নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষও আমাদের কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের গণমিছিলেও অংশ নিবে।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ থেকে ২৪ ডিসেম্বর সমমনা দলগুলো নিয়ে সারা দেশে জেলা ও মহানগর পর্যায়ে গণমিছিল পালনের ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। ২৪ ডিসেম্বর ঢাকায় আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন থাকায় ঢাকার কর্মসূচি পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ও রংপুর সিটি নির্বাচনের কারণে ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিল নির্ধারণ করা হয়। ঢাকা ও রংপুর বাদে ২৪ ডিসেম্বর সারাদেশে গণমিছিল করে বিএনপি।
গণমিছিলে বাধা, গ্রেপ্তার, হামলা, সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় পুলিশের গুলিতে ময়নাদিঘী ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ আরেফিনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ৫০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে অভিযোগ করে বিএনপি।
যুগপৎ আন্দোলন সমন্বয়ে করতে ৭ সদস্যের লিয়াজো কমিটি গঠন করেছে বিএনপি। কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বেগম সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
Leave a Reply