নিজস্ব প্রতিবেদক // উপকূলীয় জেলা বরগুনায় পানিতে ডুবে গত ৫ বছরে (২০১৮ জানুয়ারি-২০২২ ডিসেম্বর) ১১৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে জেলায় বর্তমানে এভাবে শিশু মৃত্যুর সংখ্যা কমতে শুরু করেছে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বরগুনায় ২০১৮ সালে ২৫, ২০১৯ সালে ৩৪, ২০২০ সালে ২৮, ২০২১ সালে ১৬ ও ২০২২ সালে ১০ জন মোট ১১৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে কাজ করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সমষ্টি। তারা বিশ্বাস করে, সাংবাদিকদের লেখনির মধ্য দিয়ে পানিতে ডুবে কিংবা যে কোনভাবে শিশু মৃত্যু হ্রাসকরণে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করে এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো সম্ভব হবে। তুলে ধরা যাবে শিশু মৃত্যুর পরে মর্মস্পর্শী গল্প।
যা সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সুস্পষ্ট তথ্য হিসেবে কাজে আসবে। এতে কোনো না কোনোভাবে ছড়িয়ে পড়বে সচেতনতার আলো। ধীরে ধীরে কমবে পানিতে ডুবে কিংবা শিশু মৃত্যু হতে পারে এমন সব ঝুঁকি।
সমষ্টির পরিচালক রেজাউল হক শাহিন বলেন, পানিতে ডুবে শিশুদের মৃত্যুর কারণ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, অভিভাবকদের ভূমিকা, সতর্কতা এবং আত্মরক্ষায় সাঁতার ও সচেতন করতে বরগুনা হ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় প্রশিক্ষণ কর্মশালার মাধ্যমে সংবাদ কর্মীদের ধারণা দেওয়া হয়।
বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসানুর রহমান ঝন্টু বাংলানিউজকে বলেন, যেহেতু পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে আন্তজার্তিক দিবস পালিত হয় প্রতি বছর। তাই এই দিবসটির মাধ্যমে অনেক বাবা-মাসহ অভিভাকরা সচেতন হবেন। এভাবে প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে বাবা-মা সচেতন হলেই পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু ঘটবে না।
বাংলাদেশ শিশু একাডেমি ইইসিডি প্রকল্পের গবেষক তারিকুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সন্তানকে সাঁতার শেখানোর কোনো বিকল্প নেই।
বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ফজলুল হক বাংলানিউজকে বলেন, অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব, এবং এ জেলার অধিকাংশ পরিবারের বাড়ির উঠানের পাশে বড় বড় পুকুরসহ খাল-বিল থাকায় পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু থামছে না।
উল্লেখ্য, শিশুর সুরক্ষা এবং মৃত্যুঝুঁকি কমিয়ে আনতে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ‘ইনটেগ্রেটেড কমিউনিটি বেইজড সেন্টার ফর চাইল্ড কেয়ার, প্রটেকশন অ্যান্ড সুইম-সেইফ ফেসিলিটিজ’ শীর্ষক প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে সারাদেশে ১৬টি জেলার ৪৫টি উপজেলায় ৮ হাজার শিশু-যত্নকেন্দ্র পরিচালনা করা হবে। এসব যত্নকেন্দ্রে কাজ পাবেন ১৬ হাজার গ্রামীণ নারী। প্রতিটি যত্নকেন্দ্রে ২৫ শিশুকে ভর্তি করা হবে। একই সঙ্গে ৬-১০ বছর বয়সী শিশুদের সাঁতার শেখানো হবে।
Leave a Reply