সোমবার প্রকাশিত অস্ত্র শিল্প ডেটাবেস রিপোর্টে সিপ্রি বলেছে, কোভিডের সময় থেকে অস্ত্র উৎপাদনের গড় বৃদ্ধি কমতে শুরু করেছিল বলে রিপোর্টে জানানো হয়েছে। কারণ, অস্ত্র তৈরির কাঁচামাল সময় মতো পাওয়া যাচ্ছে না। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর তা আরোও খারাপ হয়েছে।
সিপ্রির রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা দেশগুলিতে অস্ত্রের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই তুলনায় কাঁচামালের সরবরাহ হচ্ছে না। ফলে চাহিদা থাকলেও অস্ত্রের উৎপাদন কম হচ্ছে। এর ফলে ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্রে সেনাবাহিনীর সংস্কার সংক্রান্ত যে পদক্ষেপগুলি নেয়ার কথা বলা হয়েছে, তা-ও সমস্যার মুখে পড়তে পারে। ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের জন্য হাজার হাজার ডলার বরাদ্দ করছে অস্ত্র এবং গোলা-বারুদ কেনার জন্য। কিন্তু চাহিদা মতো অস্ত্র মিলছে না বলে দাবি করা হয়েছে।
রিপোর্টে লেখা হয়েছে, অস্ত্র তৈরির গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল আসে রাশিয়ার কাছ থেকে ইউরোপ এবং অ্যামেরিকা রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করায় সেই কাঁচামাল হাতে আসছে না। অন্যদিকে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়ার অস্ত্র ব্যবসা সামান্য বাড়লেও তারাও সমস্যার মুখোমুখি। নিষেধাজ্ঞার কারণে অস্ত্র তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় অনুঘটক বা সেমি কনডাক্টর তারা জোগাড় করতে পারছে না। কাঁচামাল এবং অস্ত্র বিক্রির দাম পেতেও তাদের অসুবিধা হচ্ছে।
কোভিডের সময় থেকেই অস্ত্রের বাজারে মন্দা শুরু হয়েছিল। কাঁচামাল সরবরাহে সমস্যার কারণেই সে সময় সমস্যা তৈরি হয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, ২০২১ সালে অস্ত্রের বাজার আবার ঊর্ধ্বমুখী হবে। কিন্তু ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে তা হতে পারেনি বলে রিপোর্টে বলা হয়েছে।
বিশ্বের প্রথম ১০০টি অস্ত্রের কোম্পানির মধ্যে ৪০টি অ্যামেরিকায়। অস্ত্র ব্যবসার অর্ধেকের বেশি তারা নিয়ন্ত্রণ করে। এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে বৈধ অস্ত্র ব্যবসার মোট মূল্য ৫৯২ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে শুধু মার্কিন কোম্পানিগুলির শেয়ার ২৯৯ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সাল থেকে অ্যামেরিকায় অস্ত্রের ব্যবসার পতন হয়েছে শূন্য দশমিক আচ শতাংশ। ইউরোপের কোম্পানিগুলির মোট অস্ত্র ব্যবসার শেয়ার ১২৩ বিলিয়ন ডলার। গত দুই বছরে সেখানে অস্ত্র ব্যবসা বেড়েছে চার দশমিক দুই শতাংশ।
এশিয়ার অস্ত্র কোম্পানিগুলির মোট শেয়ার ১৩৬ বিলিয়ন ডলার। ব্যবসা বেড়েছে পাঁচ দশমিক আট শতাংশ। তবে খেয়াল রাখতে হবে চীনের মোট অস্ত্র ব্যবসার পরিমাণ এখনো স্পষ্ট নয়। বিশ্বের একাধিক দেশকে অস্ত্র বিক্রি করে চীন।হয়েছে।
এই বছরের আপডেটে উল্লেখ করা হয়েছে যে প্রাইভেট ইক্যুইটি সংস্থাগুলি আরও অস্ত্র সংস্থাগুলি কিনছে, যা স্বচ্ছতার জন্য ঝুঁকি বহন করতে পারে কারণ তাদের আর্থিক বিষয়ে প্রকাশ্যে তালিকাভুক্ত সংস্থাগুলির মতো খোলা থাকার প্রয়োজন ছিল না।
সূত্র: আলজাজিরা, ডয়েচে ভেলে
Leave a Reply