অনলাইন ডেস্কঃ বরিশালে কোতোয়ালি মডেল থানায় জিডি করায় সংখ্যালঘু সহ তিনজনকে ইট দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে পুলিশ সদস্য ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে।
১৭ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে নগরীর ১৪ নং ওয়ার্ড বিসিসি ড্রেন সংলগ্ন স্থানে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলো, ওই এলাকার মৃত ফল সুনীল হাজরার স্ত্রী নমিতা বাড়ৈ, ভাইয়ের ছেলে বউ সুইটি এবং পার্শ্ববর্তী সুরাইয়া বেগম।
এদের মধ্যে গুরুতর নমিতাকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং অন্যান্যরা প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য এসআই মনিরুল ইসলাম কালুশাহ্ সড়ক কবিরাজ বাড়ির মুখ সংলগ্ন ভাড়াটিয়া বাসিন্দা ও বরিশাল টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটায় এসআই হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে জমি দখলের চেষ্টা সহ প্রাণনাশের হুমকির ঘটনায় গত একমাস পূর্বে সমিরন বাড়ি দুলালের ছেলে শিমুল বাড়ৈ বরিশাল বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এরপর এস আই মনিরুল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং গত দুইদিন পূর্বে ঘটনাস্থলে গিয়ে শিমুল বাড়ৈ ও তার স্ত্রী সুইটি এবং পার্শ্ববর্তী মাহাবুলের স্ত্রীর সুরাইয়াকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি সহ হত্যার হুমকি দেয়।
হুমকির ঘটনায় ১৬ নভেম্বর বুধবার সুইটি বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এস আই মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি সাধারণ ডায়েরি করে। থানায় ডায়েরি করার জেরে হামলা সংগঠিত হয়।
আহত নমিতা বাড়ৈ জানান, পাঁচ বছর পূর্বে নমিতা তার সম্পত্তি পুলিশ সদস্য এস আই মনিরুল ইসলামের কাছে বিক্রি করেন। ওই জমির রাস্তা না থাকায় কম দামে জমি বিক্রি করা হয়।
কিন্তু দু’বছর ধরে তার জমির রাস্তা বের করতে না পেরে নমিতার ভাই দুলালের জমি ও পার্শ্ববর্তী পুলিশের অপর সদস্য বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ থানায় কর্মরত এসআই মাহাবুলের জমি জবরদখলের চেষ্টা চালায়। এভাবে মনিরুল ইসলাম নিজেকে পুলিশের কর্মকর্তা দাবি করে এই দুই পরিবারকে হয়রানি সহ বিভিন্ন ভয়-ভীতি ও খুন-জখমের হুমকি দিয়ে আসছে।
প্রতিনিয়ত নমিতার ভাই দুলাল ও পার্শ্ববর্তী মাহাবুলের জমিও জবরদখলে মরিয়া হয়ে ওঠে। পুলিশ সদস্য হয়ে অপর পুলিশ সদস্যদের জমি জোরপূর্বক জবরদখল করতে কোন কর্ণপাত ও করে না এস আই মনিরুল।
পুলিশ সদস্য মাহাবুল ও সংখ্যালঘু নমিতার ভাই দুলাল প্রতিপক্ষ এসআই মনিরুল ইসলামের নির্যাতন, অত্যাচার , হুমকি, ধামকি সহ্য করতে না পেরে কোতোয়ালি মডেল থানায় গত বুধবার জিডি করা হয়। জিডির ঘটনায় মনিরুল আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যায়।
ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার সকালে এসআই মাহাবুলের স্ত্রী সুরাইয়া বেগম ও সংখ্যালঘু দুলাল একই সাথে যার যার জমিতে বাউন্ডারির কাজ ধরলে হঠাৎ এসআই মনিরুল ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে বাউন্ডারির কাজ বন্ধ করে দেয়। এসময় মাহাবুলের স্ত্রী সুরাইয়া এবং পার্শ্ববর্তী দুলালের বোন নমিতা ও দুলালের পুত্রবধু সুইটি প্রতিবাদ করলে মনিরুল ও তার স্ত্রী রুবিনা ইয়াসমিন, মেয়ে মোহনা, মাহিম, সহ একদল ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। মনিরুল সহ অন্যরা ইট দিয়ে পিটিয়ে নমিতা, সুইটি ও সুরাইয়াকে রক্তাক্ত জখম করে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। আহত সুরাইয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে পুলিশ সদস্য মনিরুলের কর্মকাণ্ডে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে আছি। রাস্তা ছাড়া কম দামে জমি কিনে এখন রাস্তার জন্য আমাদের জমি দখলের চেষ্টা চালায়। আমার স্বামী পুলিশের একজন এসআই পদে রয়েছেন। এটা জেনেও আমাদের সহ পার্শ্ববর্তীদের উপর আইনের নিয়ম কানুন তোয়াক্কা না করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অত্যাচার শুরু করে দেয়। আমরা তার কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে আমাদের জমিতে বাউন্ডারি দেয়ার কাজ শুরু করতে গেলে আমাদের উপর লোকজন নিয়ে হামলা চালায়। আমরা এখন আইনের আশ্রয় নেব।
অভিযুক্ত এস আই মনিরুল ইসলাম জানান, আমরা তাদের উপরে হামলা করিনি উল্টো আমার স্ত্রীর উপর হামলা চালিয়েছে প্রতিপক্ষরা।
এ বিষয় বরিশাল কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার্স ইনচার্জ আজিমুল করিম জানান, হামলার ঘটনার বিষয় কিছুই জানিনা। অভিযোগ দেয়া হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply