নিজস্ব প্রতিবেদক // বরিশালের মুলাদী উপজেলায় সরকারি কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয় নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই জমিতে একটি ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। কার্যালয়টি এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।
তবে সরকারি সম্পত্তিতে পাকা স্থায়ী ভবন নির্মাণের এখতিয়ার নেই বলে দাবি করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। জানাগেছে, বরিশালের মুলাদী উপজেলার মুলাদী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ভবনের পাশে বাজার রোডে কোটি টকার সরকারি সম্পত্তির ওপর আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। এদিকে, স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশ দাবি করছেন কোটি টকার সরকারি সম্পত্তির ওপর আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণ করা হয়েছে। সেই জমিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নাম দিয়ে এরিমধ্যে দুই তলা পাকাপোক্ত ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। তবে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নেতৃবৃন্দ দাবি করছেন জমিটি তাদের। অপরদিকে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, ভনটি বহুতল করার জন্য ফাউন্ডেশনও করা হয়েছে। ভবনের ওপরে দ্বিতীয় তলা নির্মাণের কাজ চলছে। মূলতঃ রাজনৈতিক কার্যালয় নির্মাণের নাম দিয়ে সরকারি জমি দখলের পায়তারা চলছে বলে দাবি স্থানীয়দের। আর এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন স্থানীয় সচেতন মহল ও আওয়ামীলীগের অধীকাংশ নেতারা। আওয়ামীলীগ নেতাদের দাবী আমাদের দলীয় কার্যালয়টি হবে নিজেস্ব সম্পত্তিতে, কিন্তু দলের প্রভাবশালী এক নেতা নিজের সার্থ হাসিলের জন্য সরকারি সম্পত্তি দখল করে দলীয় কার্যালয়ের নাম দিয়ে ভবন নির্মান করেছেন। বিতর্কিত জায়গায় ভবন নির্মান শেষে এখন জেলা পর্যায়ের শীর্ষ নেতাদের দিয়ে উদ্ভোধনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ঐ প্রভাবশালী নেতা।
এ প্রসঙ্গে মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভকপতি ও পৌর মেয়র শফিক উজ্জামান রুবেল বলেন, ‘আওয়ামী লীগের ভবন হয়েছে শুনেছি। তবে জমি দাতা কে তা আমার জানা নেই। মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মাইনুল ইসলাম সবুজ বলেন, কার্যালয় উদ্বোধনের তারিখ এখনো নির্ধারন হয়নি। ভবন নির্মানের জমি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন শুনেছি জমিটি জেলা পরিষদের। আমি যতটুকু জানি জমিটি আওয়ামী লীগের না, স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের জমি। তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিব জমিটি তাদের দাবি করে ইতিপূর্বে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর কাছে অভিযোগও দিয়েছেন।
তবে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবের মৃত্যুর পরে জানতে পারি জমিটি জেলা পরিষদের এবং এক বছর মেয়াদে লিজ নিয়ে পাকা ভবন করে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের নামে উদ্বোধনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে বরিশাল জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আহসান হাবিব মুঠোফোনে বলেন, প্রথমত সরকারি জমিতে পাকা স্থাপনা বা বহুতল ভবন নির্মাণের কোন সুযোগ নেই। কেননা আমরা স্থায়ী বন্দবস্ত দেই না। তবে কেউ অস্থায়ীভাবে বরাদ্দ নিয়ে থাকলে সেখানে অনুমতি সাপেক্ষে আধাপকা বা টিনসেট স্থাপনা নির্মাণ করতে পারবে। মুলাদী উপজেলায় জেলা পরিষদের জমিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয় নির্মাণের বিষয়ে কোন আবেদন করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে জেলা পরিষদের এই কর্মকর্তা বলেন, আবেদন করা হয়েছে কিনা তা কাগজপত্র না দেখে বলা যাচ্ছে না। তবে সরকারি জমিতে পাকা স্থাপনা করা যাবে না।
এমনটি হয়ে থাকলে সরেজমিনে খোঁজ খবর নিয়ে আইনে যেভাবে আছে সেভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply