ইউএনও বলেন, এব্যাপারে কলেজটিতে মিটিং কল করা হয়েছে। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
এর আগে সোমবার (৩১ অক্টোবর) দুপুর ১১টায় সালথা সরকারি কলেজের হলরুমে বিদায় অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। বেলা ১২টার দিকে অনুষ্ঠান শেষে পরীক্ষার্থীরা কলেজ মাঠে নামে ভিন্ন পোশাকে। তারা কলেজের মনোগ্রামযুক্ত সাদাকালো রঙের টি শার্ট পড়ে মেতে উঠে আনন্দ উচ্ছ্বাসে।
এক পর্যায়ে রঙ খেলা ও একজন আরেকজনের টি শার্টে লিখে অশ্লীল সব ভাষা। যেসব শব্দ সীমা অতিক্রম করে অশ্লীলতার। এভাবেই উৎযাপিত হয় এখানকার পরীক্ষার্থীদের শেষ দিন র্যাগ ডে। পরে এসব ছবি আবার শিক্ষার্থীরা নিজেরাই ফেসবুকে পোষ্ট করে। যেকারণে অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বার্তা দিয়ে মোঁড়ানো পোশাকসহ ছাত্র-ছাত্রীদের ছবি মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে রীতিমত সমালোনার ঝড় ওঠে জনসাধারণের মাঝে।
সালথা সরকারি কলেজের কয়েকজন পরীক্ষার্থী জানান, দীর্ঘ আড়াই বছর লেখাপড়া করেছি সালথা সরকারি কলেজে। তাই এই কলেজের শিক্ষার্থীদের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে আমাদের। সুখে দুখে সবাই একসাথে মিলেমিশে থেকেছি। বিদায় নেয়ার সময় সবাইকে একসাথে পেয়েছি এই স্মৃতি যাতে সারাজীবন ধরে রাখতে পারি সেই জন্য র্যাগ ডেতে আমাদের সাদা টি শার্টে যে যার মত লিখে দিয়েছে।
অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ ভাষা লেখার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বলেন, সবাইতো খারাপ ভাষা লিখেনি। যারা লিখেছে এবং ফেসবুকে পোষ্ট করেছে তাদের জন্য আমাদের সবার আনন্দটাই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। সালথা সরকারি কলেজের মনোগ্রাম যুক্ত টি শার্টের উপর অশ্লীল কুরুচিপূর্ণ বার্তা লেখা যেমন কলেজের মানহানী হয় তেমনি প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়েও প্রশ্ন উঠে।
তবে অনেক শিক্ষার্থী সালথা সরকারি কলেজের ব্যবস্থাপনা পর্ষদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলেন, এতদিন এই কলেজে লেখা-পড়া করেছি এখন বিদায়ের সময় কলেজ থেকে আমাদের একটা ফুল দিয়েও বিদায় দেয়া হয়নি।
সালথা সরকারি কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘদিন একসাথে লেখাপড়া করার সময় অনেকের সাথে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয়। শিক্ষকদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা থেকে বিদায় অনুষ্ঠানে দোয়া মাহফিলের আয়োজন হতো। আমাদের সময় র্যাগ-র্যাগিং শব্দটিতে সবার ভয় ছিল। এখনকার ছাত্র-ছাত্রীরা বিদায় অনুষ্ঠানের দিন স্বাভাবিক ভাবেই র্যাগ ডে নামে অপসংস্কৃতি উদযাপন করে। যার মাধ্যমে সমাজে অশ্লীলতা ছড়াচ্ছে।
এব্যাপারে সালথা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিনয় কুমার চাকী বলেন, সালথা কলেজ সরকারি। তাই এ বিষয় আমি কোনো মন্তব্য করবো না। এটা ইউএনও মহোদয় দেখবেন।
এব্যাপারে সালথা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ কৃষ্ণচন্দ্র বর্মন বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজের নির্ধারিত বিদায় অনুষ্ঠান শেষে তারা কলেজের বাইরে গিয়ে এসব অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বার্তা লিখে ফেসবুকে ছড়িয়েছে। ফেসবুক পোষ্টের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। যেহেতু শিক্ষার্থীরা কলেজ সংশ্লিষ্টতায় অশ্লীল-কুরুচিপূর্ণ বার্তা লিখে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলমান।
সালথা সরকারি কলেজের পরিচালনা পর্ষদ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আকতার হোসেন শাহিন বলেন, এব্যাপারে কলেজটিতে মিটিং কল করা হয়েছে। ঘটনার সত্যতা পেলে ব্যবস্থা নেব। আর এ ঘটনায় কলেজ সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত কি-না সে বিষয়টি জানার চেষ্টা করবো। কলেজ সংশ্লিষ্ট কেউ জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply