প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালে বিশ্বজুড়ে ২ লাখ ৫৩ হাজার বর্গকিলোমিটার বনাঞ্চল ধ্বংস হয়েছে। রাশিয়ার দাবানল ও ব্রাজিলের আমাজন বনভূমি ধ্বংসের কারণে বিশ্বে বন উজাড়ের হার রেকর্ড পরিমাণ বাড়তে দেখা যায়। মানবসৃষ্ট কারণে বা বনভূমি উজাড় করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে ব্রাজিল। দেশটিতে ৪০ শতাংশ বনভূমি ধ্বংস ইচ্ছাকৃত।
গ্লোবাল ফরেস্ট ওয়াচের প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছে অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই) ও যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারিল্যান্ড ইউনিভার্সিটি।
ডব্লিউআরআইয়ের বিশ্লেষকেরা এক ব্রিফিংয়ে বলেছেন, প্রচুর পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণের কারণে বন জলবায়ু পরিবর্তনের ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু দ্রুত বনভূমি ধ্বংসের কারণে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
এর আগে গত বছর নভেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্বের ১০০ নেতা জলবায়ু সুরক্ষায় যে পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির কোনো মিল নেই।
পরিবেশ বিশ্লেষকেরা বলেন, ২০৩০ সালের মধ্যে বনভূমি উজাড় বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিশ্বনেতারা। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি পালন করা হচ্ছে না।
ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউটের বৈশ্বিক বনভূমি কর্মসূচির পরিচালক রড টেলর ২০৩০ সালে বনভূমি-সম্পর্কিত বিশ্বনেতাদের প্রতিশ্রুতি প্রসঙ্গে বলেন, আমরা বনভূমি ধ্বংস কমতে দেখছি না। বস্তুত আমরা তেমনটাই দেখার প্রত্যাশী ছিলাম।
তিনি বলেন, এটা চরম দুশ্চিন্তার বিষয়। আমরা দেখছি- বারবার আগুন ধরছে। স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে যা হতো, তার চেয়েও আরও তীব্র ও বিস্তৃত দাবানল তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে।
ডব্লিউআরআইয়ের বিশ্লেষকেরা আরও বলেন, গ্রীষ্মাঞ্চলের ৩৭ হাজার ৫০০ বর্গকিলোমিটার পুরোনো চিরহরিৎ বনভূমি যে পরিমাণ কার্বন ধরে রাখে, তা উজাড় হওয়া নানা দিক থেকে উদ্বেগের বিষয়। তবে আগের বছরের চেয়ে বনভূমি ধ্বংসের হার এ বছর প্রায় সমান হলেও কার্বন নির্গমনের বিষয়টি উদ্বেগের। বন ধ্বংসের ফলে যে পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড নিঃসরণ হয়, তা ভারত এক বছরে জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ালে সেই পরিমাণ কার্বন ডাই-অক্সাইড তৈরি করে।
এদিকে, কানাডা, রাশিয়া ও আলাস্কার মতো অঞ্চলেও গত বছর ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটার বনভূমি ধ্বংস হয়েছে। এর কারণ, রাশিয়ায় সৃষ্ট দাবানল। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট শুষ্ক ও গরম আবহাওয়া কারণে এ দাবানল সৃষ্টি হয়।
Leave a Reply