রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের মার্চ মাসের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে। আজ সোমবার তারা এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সাতটি জাতীয় দৈনিক, পাঁচটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে সংগঠনটি।
এদিকে, মার্চের দুর্ঘটনায় মধ্যে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ঢাকা বিভাগে ১১৭টি দুর্ঘটনায় ১৪১ জন মারা গেছেন। তবে রাজধানী ঢাকায় ১৯টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ৬ জন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা হয়েছে সিলেট বিভাগে। দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিল ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ, যা প্রায় ২৮ দশমিক ৭৬ শতাংশ। দ্বিতীয় পর্যায়ে ছিল মোটরসাইকেল ২২ শতাংশ। দুর্ঘটনা সবচেয়ে বেশি ঘটেছে সকালের দিকে।
রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় গত মার্চ মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিল ১৬ দশমিক ৭৫ জন। এই হিসাবে ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চ মাসে প্রাণহানি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ। দুর্ঘটনায় ১৮-৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ নিহত হয়েছেন ৪৬৩ জন, যা মোট মৃত্যুর ৭৮ দশমিক ৬০ শতাংশ।
সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনার পর্যবেক্ষণে দেখানো হয়েছে, ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ চালকদের বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী যানবাহন চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যান্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছে। পথচারী নিহতের ঘটনাও ব্যাপক বেড়েছে। পথচারীরা যেমন সড়কে নিয়ম মেনে চলেন না, তেমনি যানবাহনগুলোও বেপরোয়া গতিতে চলে। ফলে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে।
প্রতিবেদনের বিষয়ে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক সাইদুর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সরকারের তেমন কোনো কার্যকর উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে মূলত সড়ক পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও অব্যবস্থাপনার কারণে। এই অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।
Leave a Reply