নিজস্ব প্রতিবেদক // বরিশাল নগরীর করিম কুটির এলাকায় অবস্থিত এশিয়ান আই কেয়ার হাসপাতালের বিরুদ্ধে এক রোগীর সাথে প্রতারণার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আর এই অভিযোগ হাসপাতালের খোদ চেয়ারম্যান ডা. ভবেস চন্দ্র রায়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, গত ১৪ ই ফেব্রুয়ারী নগরীর ১৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. মনিরুজ্জামান (৫৮) চোখের দৃষ্টি সমস্যা দেখা দিলে সদর রোডস্থ ল্যাব এইড হাসপাতালে ডা. ভবেস চন্দ্র রায়ের কাছে যান এবং একই সমস্যা জনিত কারনে পুনরায় ২০/০২/২০২২ ইং তারিখে ডা. ভি বি পালের কাছে নিজের দৃষ্টিশক্তির হ্রাসের কথা জানান। তখন দুজন ডাক্তারই তাদের নিজস্ব মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এশিয়ান আই কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ প্রদান করেন।
এরপর চোখের লেন্স স্থাপনের জন্য ৫০ হাজার টাকা দামের জাপানি লেন্সসহ অপারেশন ফি বাবদ আরও ১০ হাজার টাকাসহ মোট ৬০ হাজার টাকার বিনিময়ে দৃষ্টিশক্তি পুরোপুরি ভালো হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।
নিজের দৃষ্টিশক্তি ফিরে পেতে পরিবারের সাথে আলোচনা করে উভয় ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী ভুক্তভোগী সরলমনা মনিরুজ্জামান গত ০৫/০৩/২০২২ ইং তারিখে নগরীর হাতেম আলী কলেজ রোডে করিম কুটির মসজিদের পাশে অবস্থিত এশিয়ান আই কেয়ার হাসপাতালে ছুটে আসেন। হাসপাতালের অপারেশন খরচ ও লেন্সের দাম পরিশোধ করতে সে সময় ভুক্তভোগী মনিরুজ্জামানের সাথে যান তার সন্তান । টাকা পরিশোধের আগে কৌতুহলবশত ভুক্তভোগীর ছেলে ৫০ হাজার টাকা দামের লেন্স টি দেখতে চাইলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তখন লেন্সটি মোড়কজাত অবস্থায় দেখান।
লেন্সের মোড়কে প্রিন্টকরা কিউ আর কোডে স্ক্যান করেন মনিরুজ্জামানের ছেলে তখন বেড়িয়ে যায় সহজ সরল অসহায় মানুষের প্রতারিত হওয়ার আসল রহস্য। স্ক্যান করলে দেখা যায় লেন্সের প্রস্ততকারী দেশ থাইল্যান্ড এবং তার মূল্য মাত্র ১৬ হাজার টাকা। ৫০ হাজার টাকা দামের জাপানি লেন্সের নামে ১৬ হাজার টাকার থাইল্যান্ডের লেন্স কেন দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডাক্তার ভবেস চন্দ্র রায় ভুক্তভোগী মনিরুজ্জামানের ছেলেকে ইনিয়ে বিনিয়ে উত্তর দেন। তবে সাংবাদিকদের কাছে এই ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন হাসপাতালের অন্য এক পরিচালক রিপন মজুমদার।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাসপাতালের ম্যানেজার বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ২০২১ ইং সালের আগস্ট মাসে প্রতিষ্ঠিত এই হাসপাতালের চেয়ারম্যান অভিযুক্ত ডা. ভবেস চন্দ্র রায় নিজেই, সুতরাং আপনারা সবকিছু তার কাছেই জিজ্ঞেস করেন। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডা. ভবেস চন্দ্র রায় মুঠোফোনে ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন বলেন, ৬০ হাজার টাকা সর্বমোট প্যাকেজ ধরা হয়েছিল তবে জাপানি লেন্স স্থাপনের কথা অস্বীকার করেন।
এবং তিনি আরও বলেন এই ৬০ হাজার টাকা মেশিন চার্জ, অপারেশন ফি, ও হাসপাতালের খরচসহ ধরা হয়েছে। এ বিষয়ে জানতে বরিশালের সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসান মুঠোফোনে বলেন, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
Leave a Reply